আসছালামু আলাইকুম? প্রিয় পাঠক আজকে আমরা তোমাদের শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি শাওয়ালের ৬ টি রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত জানত্র চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আসা করি এখানে শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম
শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখার বিধান রয়েছে। এ রোজা পালনের মর্যাদা অনেক বড়, এতে প্রভূত সওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি এ রোজাগুলো পালন করবে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল। শাওয়াল মাসের প্রথম দন ঈদুল ফিতর পালিত হয়। আর এই দিন রোজা রাখা হারাম। এই দিন ছাড়া শাওয়াল মাস শেষ হওয়ার আগে যেকোনো ছয় দিন এ রোজা রাখা যায়।
শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ত
নিয়ত মানে হইচ্ছাপোষণ করা। যা মুখ দিয়ে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। মনে মনে ইচ্ছাপোষণ করলেই নিয়ত হয়ে যায়। যেমন কেউ যদি আসছের নামাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় তাহলে তার মসজিদে গিয়ে আর আরবিতে নিয়ত করা লাগবে। বাড়ি থেকে যে নিয়ত করর এসেছে এতেই নামাজ হয়ে যাবে। ঠিক তেমনি রোজা রাখার বেলায় একি রকম। ফজরের পূর্বে শাওয়ালের রোজার রাখার ইচ্ছাপোষণ করলেই রোজা হয়ে যাবে। আরবিতে বা বাংলায় নিয়ত করতে হবে না।শাওয়াল মাসের রোজার জন্য যদি কেউ এই নিয়মে নিয়ত করে যে,''আজ আমি আল্লাহর নামে একটি শাওয়ালের রোজা রাখিবো।" তাছাড়া এরূপভাবেও বলতে পারে যে,"আজ আমি আল্লাহর সন্তুষ্ট লাভের উদ্দেশে একটি রোজা রাখিবো।" তাহলে নিয়ত হয়ে যাবে।
শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস
আবু আইয়ুব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল এরপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল।”[সহিহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, জামে তিরমিজি, সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনে মাজাহ]এ হাদিসকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য বাণী দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পরে ছয়দিন রোজা রাখবে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল:যে ব্যক্তি একটি নেকি করবে সে দশগুণ সওয়াব পাবে।”অন্য বর্ণনাতে আছে- “আল্লাহ এক নেকিকে দশগুণ করেন। সুতরাং এক মাসের রোজা দশ মাসের রোজার সমান। বাকী ছয়দিন রোজা রাখলে এক বছর হয়ে গেল।”[সুনানে নাসায়ী, সুনানে ইবনে মাজাহ]হাদিসটি সহিহ আত-তারগীব ও তারহীব (১/৪২১) গ্রন্থেও রয়েছে। সহিহ ইবনে খুজাইমাতে হাদিসটিএসেছে এ ভাষায়- “রমজান মাসের রোজা হচ্ছে দশ মাসের সমান। আর ছয়দিনের রোজা হচ্ছে- দুই মাসের সমান। এভাবে এক বছরের রোজা হয়ে গেল।”
হাম্বলি মাযহাব ও শাফেয়ি মাযহাবের ফিকাহবিদগণ স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন যে, রমজান মাসের পর শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখা একবছর ফরজ রোজা পালনের সমান। অন্যথায় সাধারণ নফল রোজার ক্ষেত্রেও সওয়াব বহুগুণ হওয়া সাব্যস্ত। কেননা এক নেকিতে দশ নেকি দেয়া হয়।
এ ছাড়া শাওয়ালের ছয় রোজারাখার আরও ফায়দা হচ্ছে- অবহেলার কারণে অথবা গুনাহর কারণেরমজানের রোজার উপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে সেটা পুষিয়ে নেয়া।কেয়ামতের দিন ফরজ আমলের কমতি নফল আমল দিয়ে পূরণ করা হবে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: কেয়ামতের দিন মানুষের আমলের মধ্যে সর্বপ্রথমনামাযের হিসাব নেয়া হবে।তিনি আরো বলেন: আমাদের রব ফেরেশতাদেরকে বলেন –অথচ তিনি সবকিছু জানেন- তোমরা আমার বান্দার নামাযদেখ; সেকি নামায পূর্ণভাবে আদায় করেছে নাকি নামাযে ঘাটতি করেছে। যদি পূর্ণভাবে আদায় করে থাকে তাহলে পূর্ণ নামায লেখা হয়। আর যদি কিছু ঘাটতি থাকে তখন বলেন: দেখ আমার বান্দার কোন নফল নামায আছে কিনা? যদি নফল নামায থাকে তখন বলেন: নফল নামায দিয়ে বান্দার ফরজের ঘাটতি পূর্ণ কর। এরপর অন্য আমলের হিসাব নেয়া হবে।[সুনানে আবু দাউদ]
শাওয়াল মাসের রোজা কখন রাখতে হয়
শাওয়াল মাসের প্রথম দন ঈদুল ফিতর পালিত হয়। আর এই দিন রোজা রাখা হারাম। এই দিন ছাড়া শাওয়াল মাস শেষ হওয়ার আগে যেকোনো ছয় দিন এ রোজা রাখা যায়।
শাওয়াল মাসের রোজা রাখা কি ফরজ নাকি সুন্নত?
শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত-মুস্তাহাব; ফরজ নয়।
Tag:শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম,নিয়ত,ফজিলত [ ৬ টি রোজা],শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস, শাওয়াল মাসের রোজা কখন রাখতে হয়

Any business enquiry contact us
Email:-Educationblog24.com@gmail.com
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)