স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ -প্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান -শীর্ষক প্রতিবেদন | এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান/ উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (৮ম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৬ | ২০২১ সালের এসএসসি ৮ম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (এসাইনমেন্ট-৬) সমাধান/উত্তর


       
       

    এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান/ উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (৮ম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৬  


    স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ -প্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান -শীর্ষক প্রতিবেদন

    ১. সামরিক শাসন বিরােধী আন্দোলনঃ 

    ১৯৬২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতা আতাউর রহমানের বাসভবনে সরকার বিরােধী এক গােপন বৈঠকে মিলিত হন । ৩০ জানুয়ারি সােহরাওয়ার্দী করাচি গেলে তাঁকে দেশবিরােধী ষড়যন্ত্রের অভিযােগে গ্রেফতার করা হয় । এ সংবাদ পরদিন পূর্ব পাকিস্তানের পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলের ছাত্র সমাজ সরকার বিরােধী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এবং এর মধ্যদিয়ে আন্দোলনের প্রথম পর্বের সূচনা হয় । এর প্রতিবাদে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ ৩১ জানুয়ারি গভীর রাতে মধুর ক্যান্টিনে বৈঠকে মিলিত হয় এবং পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সৰ্ত্তক ধর্মঘট পালিত হয় । ধর্মঘটের সংবাদ পত্রিকায় ছাপানাে না হওয়ায় ২ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবে যায় এবং সরকারি পত্রিকা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় । 

    ৩ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্জুর কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সফরে আসলে ছাত্ররা তাকে নাজেহাল ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দেয়ালগুলাে সামরিক সরকারবিরােধী লেখায় ভরে যায় । ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘােষণা করে । এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন মিছিল বের করে এবং উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিশের বাস পুড়িয়ে দেয় । ৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ব ঘােষণা অনুযায়ী স্বয়ং আইয়ুব খানকেই ঘেরাও করার কর্মসূচি নেওয়া হয় । 

    ফলে ৭-৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় ব্যাপক পুলিশী নির্যাতন চলতে থাকে এবং এ সময়ের মধ্যে প্রায় ২২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয় । এর প্রতিবাদে পূর্ববাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করে । মার্চ মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুললে আবার আন্দোলন শুরু হয় । ১৫ মার্চ থেকে অব্যাহতভাবে ধর্মঘট চলতে থাকে । এ সময় ডাকসুর সহ - সভাপতি রফিকুল হক ও ছাত্র ইউনিয়ন নেতা হায়দার আকবর খান প্রমুখ নেতাসহ বহু ছাত্রকে গ্রেফতার করে জেলে বন্দি করা হয় ।


    ২. পূর্ব পাকিস্থানের প্রতি বৈষম্য ও ছয় দফাঃ 

    ছয় দফা দাবি উত্থাপন পাকিস্তান রাষ্ট্রের ইতিহাসে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় । বস্তুতপক্ষে , ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর থেকে পূর্বাঞ্চলের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের ঔপনিবেশিক মনােভাব তথা এ অঞ্চলের রাজনীতিবিদদের অবমূল্যায়ন , অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্যনীতি অনুসরণ , সামরিক দিক থেকে গুরুত্ব না দেওয়া প্রভৃতি ছয় দফা দাবিকে যুক্তিযুক্ত করে তুলেছিল । তাই ছয় দফা দাবি উত্থাপনের পেছনে একটা তাৎপর্যপূর্ণ পটভূমি রয়েছে । 

    ১. রাজনৈতিক পটভূমি : ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাবের ফলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হলেও পূর্ব পাকিস্তানকে কখনােই লাহাের প্রস্তাবভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনাধিকার দেওয়া হয়নি । ১৯৪৭ সালের ভারত শাসন আইনে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্য প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা ও গণমুখী সংবিধান প্রণয়নের কথা বলা হলেও পাকিস্তানের প্রথম সরকার গঠন ও সংবিধান প্রণয়ন করতে এক দশক অতিবাহিত হয়ে যায় । তাছাড়া ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠন করলেও পশ্চিমা স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে যুক্তফ্রন্ট সরকার সফল হতে পারেনি । 

    ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিকদের মৌলিক অধিকার হরণ করেন । ১৯৫৯ সালে ‘ মৌলিক গণতন্ত্র ' নামক অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাল করে বাংলার মানুষের ভােটাধিকার হরণ করে ১৯৬০ ও ১৯৬৫ সালে নির্বাচনের নামে প্রহসন কায়েম করেন । এভাবে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পর থেকে ১৯৬৬ সাল তথা স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত পাকিস্তানে কোন জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি । তাই এ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের ওপর সকল পরিকল্পনা বা সিদ্ধান্ত মূলত কেন্দ্র থেকে চাপিয়ে দেওয়া হতাে । এছাড়া ১৯৬৫ সালে পাক - ভারত যুদ্ধকালে দীর্ঘদিন কেন্দ্রের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন যায় এবং সামরিক দিক থেকে পূর্বাঞ্চল একেবারে অরক্ষিত হয়ে পড়ে । জরুরি অবস্থায় কোনাে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত ক্ষমতা পূর্ব পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের ছিল না । এমনি অবস্থার প্রেক্ষিতে শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উত্থাপনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনাধিকার দাবি করেন । 

    ২. প্রশাসনিক পটভূমি : পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রের প্রথম শ্ৰেণীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত সকল স্তরে পূর্ব পাকিস্তানিদের অংশগ্রহণ ছিল নিতান্তই নগণ্য সংখ্যক । পরিকল্পিত উপায়ে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানিদের নিয়ােগ করা হয়নি । পাকিস্তানি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হাসান আশকারী রিজভি একটি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন আইয়ুব আমলে মােট ৬২ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র ২২ জন ছিলেন বাঙালি মন্ত্রী । এই ২২ জনের মধ্যে কাউকে কোন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। পাকিস্তানি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হাসান আশকারী রিজভি একটি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন আইয়ুব আমলে মােট ৬২ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র ২২ জন ছিলেন বাঙালি মন্ত্রী । এই ২২ জনের মধ্যে কাউকে কোন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি । ফলে পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে যে কোন পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের তেমন কোন ভূমিকা থাকতাে না । এজন্যই ৬ দফায় স্বায়ত্তশাসনাধিকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের সীমিত ক্ষমতা এবং আঞ্চলিক সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি উত্থাপিত হয়েছিল । 

    ৩. অর্থনৈতিক পটভূমি : পাকিস্তান রাষ্ট্রের উৎপত্তি থেকেই পূর্ব পাকিস্তান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে শােষিত ও বঞ্চিত হতে থাকে । ব্যাংক , বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থিত হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের অর্জিত আয় স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমে চলে  যেতাে । আবার চাকরির ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানিরা সংখ্যাধিক্য থাকায় এ সমস্ত আয় মূলত : তারাই ভােগ করতাে । ১৯৬১ সালে সর্বপ্রথম কেন্দ্রীয় রাজস্ব আয় - ব্যয়ে দুই প্রদেশের অবদান নিয়ে একটি সমীক্ষায় দেখা যায় যে , কেন্দ্রীয় রাজস্ব আয়ে পূর্ব পাকিস্তানের অবদান ২২ % এবং চলতি ব্যয়ে সে হিস্যা হল ১২ % । কিন্তু এ হিসাবও যথার্থ নয় । কারণ , পূর্ব পাকিস্তানিদের আমদানি ও আয়কর শুল্ক পশ্চিম পাকিস্তানে জমা দিতে হতাে । আবার রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত মােট আয়ের ৬০ % আসে পূর্বাঞ্চল থেকে । কিন্তু আয়ের ক্ষেত্রে পুর্ব পাকিস্তানের অবদান বেশি হলেও ভােগ ও উন্নয়ন ব্যয়ে এ অঞ্চলের লােকজন তাদের ন্যায্য অংশ পেতাে না । পাকিস্তানের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে মাথাপিছু ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৮০ টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল ২০৫ টাকা । দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বৈষম্য কমানাের পদক্ষেপ নেওয়া হলে পূর্বাঞ্চলে মাথাপিছু ব্যয় হয়েছিল ১৯০ টাকা পশ্চিম পাকিস্তানে ২৯২ টাকা ।

    ৪. সামরিক পটভূমি : ৬ দফা উত্থাপনের সামরিক প্রেক্ষাপট ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পাকিস্তান রাষ্ট্রের সামরিক , নৌ এবং বিমান বাহিনীর সদর দপ্তর ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে । জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানিদের অংশগ্রহণ ছিল স্বল্পসংখ্যক । সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হচ্ছে ১৯৬৫ সালে পাক - ভারত যুদ্ধকালে পূর্ব এরূপ রাজনৈতিক , প্রশাসনিক , অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের দাবি সম্বলিত ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি প্রণয়ন করেন এবং ১৯৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লাহােরে পাকিস্তান জাতীয় কনফারেন্সে উত্থাপনের চেষ্টা করেন । ঐদিন ৬ দফা দাবি উত্থাপনে ব্যর্থ হয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর ৬ দফা প্রচার করেন এবং দেশে ফিরে আসেন । ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ দফা উত্থাপিত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা গৃহীত হয় ।


    ৩. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা ও গণঅভ্যুত্থানঃ 

    ১৯৬৭ সালে ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি যখন ব্যাপক । আইয়ুব বিরােধী আন্দোলনে রূপ লাভ করে তখন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান আন্দোলনকে স্তিমিত করার এক কূটকৌশল আবিষ্কার করেন । ১৯৬৮ সালের ৬ জানুয়ারি ২ জন সি.এস.পি অফিসারসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযােগ এনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় । তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযােগ ছিল তারা পূর্বের বছর অর্থাৎ ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতে আগরতলায় এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং ভারতীয়দের সহযােগিতায় পূর্ব পাকিস্তানকে দায়ের করা হয় । তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযােগ ছিল তাঁরা পূর্বের বছর অর্থাৎ ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতে আগরতলায় এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং ভারতীয়দের সহযােগিতায় পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানাের পরিকল্পনা করেন । অভ্যুত্থান সফল করার জন্য তাঁরা ভারতীয়দের নিকট থেকে অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহ করেন বলে অভিযােগ করা হয় । এই মর্মে অর্থ ও অস্ত্রের একটি তালিকাও তৈরি করা হয় । কয়েকদিনের মধ্যে এক প্রেসনােটে বলা হয় যে , গ্রেফতারকৃত আসামীরা নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন এবং এ ব্যাপারে আরাে তদন্ত চলছে । ৬ জানুয়ারি আসামীদের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করে ১৯৬৮ সালে ১৮ জানুয়ারি “ ষড়যন্ত্র পরিকল্পনা ও পরিচালনার অভিযােগ এনে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করে পূর্বের ২৮ জন সহ মােট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আর একটি মামলা দায়ের করা হয় । এটাই “ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ” নামে খ্যাত ।

    করে। এই ১১ দফা দাবি ছিল খুবই সময়ােপযােগী । ফলে দ্রুত এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিরােধী দলগুলাের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয় । ৮ ই জানুয়ারি পাকিস্তানের ৮ টি রাজনৈতিক দল মিলে ‘ গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ ' ( ডাক ) নামক মাের্চা গঠন করে এবং ৮ দফা দাবি পেশ করে ।

    ৪. স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতাঃ


    ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির পর ঊনসত্তরের গণআন্দোলন নুতন রূপ লাভ করে । ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে ( সােহরাওয়ার্দী উদ্যান ) ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় । প্রায় ১০ লাখ ছাত্র - জনতার এই সংবর্ধনা সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু ' উপাধিতে ভূষিত করা হয় । তদানীন্তন ডাকসুর ভিপি ছাত্রনেতা তােফায়েল আহমেদ এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন । ঐ সংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধু ছাত্রদের ১১ দফা দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ছয় দফা ও ১১ দফা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি দেন । ২৬ শে ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খানের সাথে বঙ্গবন্ধু গােলটেবিল বৈঠকে ৬ দফা ও ১১ দফার প্রশ্নে অটল থাকেন । এদিকে পশ্চিম পাকিস্তানেও আইয়ুববিরােধী আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে । গােলটেবিল বৈঠকের আলোচনা বার বার ব্যর্থ হতে থাকে । পুরাে দেশে আইন - শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে । মার্চ মাসে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৯০ জন নিহত হয় । অবশেষে ১০ ই মার্চের বৈঠকে আইয়ুব খান সংসদীয় পদ্ধতি প্রবর্তন ও প্রাপ্তবয়স্কের ভােটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচনের কথা ঘােষণা করেন । ২২ শে মার্চ আইয়ুব খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মােনায়েম খানকে অপসারণ করেন । তাতেও গণআন্দোলন থামানাে যায়নি । ২৫ শে মার্চ আইয়ুব খান সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করেন । এভাবে পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরােধী গণঅভ্যুত্থান সফলতা অর্জন করে । উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গ্রাম ও শহরের কৃষক ও শ্রমিকদের মাঝে শ্রেণি চেতনার উন্মেষ ঘটে । পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্খা বৃদ্ধি পায় ।



    ২০২১ সালের এসএসসি ৮ম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (এসাইনমেন্ট-৬) সমাধান/উত্তর



    Tag: এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান/ উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (৮ম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৬,  ২০২১ সালের এসএসসি ৮ম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (এসাইনমেন্ট-৬) সমাধান/উত্তর, স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ -প্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান -শীর্ষক প্রতিবেদন

                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com



    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook এবং Telegram পেজ)