জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকায় ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্ম গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় লেখক খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে পরিবারের নতুন সদস্যের নাম রাখেন রাসেল'। এই নামকরণে মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শৈশব থেকেই দুরন্ত প্রাণবস্তু রাসেল ছিলেন পরিবারের সবার অতি আদরের। কিন্তু মাত্র দেড় বছর বয়স থেকেই প্রিয় পিতার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের একমাত্র স্থান হয়ে ওঠে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট। তবে সাত বছর বয়সে ১৯৭১ সালে তিনি নিজেই বন্দি হয়ে যান।
খেলাধুলায় শেখ রাসেল রচনা
ছোট রাসেলের সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটতো বাড়ির ভেতরের সাইকেল চালিয়ে। শেখ হাসিনা শেখ রাসেল' বইয়ে বলেন, রাসেলের একবার অ্যাকসিডেন্ট হলো। সেদিনটার কথা মনে পড়লে এখনও গা শিউরে ওঠে। রাসেলের একটা ছোট মপেট মোটরসাইকেল ছিল আর একটা সাইকেলও ছিল। ও কখনও কখনও সাইকেল নিয়ে রাস্তায় চলে যেতো। পাশের বাড়ির ছেলেরা ওর সঙ্গে সাইকেল চালাতো। আদিল ও ইমরান দুই ভাই এবং রাসেল একই সঙ্গে খেলা করতো। একদিন মপেট চালাবার সময় রাসেল পড়ে যায় আর ওর পা আটকে যায় সাইকেলের পাইপে। বেশ কষ্ট করে পা বের করে। আমি বাসায় উপর তলায় জয় ও পুতুলকে নিয়ে ঘরে বসে। হঠাৎ রাসেলের কান্নার আওয়াজ পাই। ছুটে উত্তর পশ্চিমের খোলা বারান্দা চলে আসি, চিৎকার করে সকলকে ডাকি। এর মধ্যে দেখি কেউ একজন ওকে কোলে করে নিয়ে আসছে। ওর পায়ের অনেকখানি জায়গা পুড়ে গিয়ে বেশ গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। শেখ রাসেল তার ভাগ্নে সজীব ওয়াজেদ জয় এর সাথে খেলা করত।
শেখ হাসিনা স্মৃতিচারণ করেন- ‘টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে রাসেলের খেলাধুলার অনেক সাথি ছিল। বাড়ি গেলে গ্রামের ছোট অনেক বাচ্চা জড়ো করত। তাদের জন্য ডামি বন্দুক বানিয়ে দিয়েছিল। সেই বন্দুক হাতে তাদের প্যারেড করাত। প্রত্যেকের জন্য খাবার কিনে নিয়ে যেত। রাসেলের খুদে বাহিনীর জন্য জামা-কাপড় ঢাকা থেকেই কিনে নিয়ে যাওয়া হতো।'