এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (২য় সপ্তাহ) | ২০২১ সালের ২য় সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর

 


       
       
                 

    এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (২য় সপ্তাহ) 

    সিন্ধু সভ্যতার আর্থ - সামাজিক অবস্থার বিশ্লেষণপূর্বক এ সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সাথে তােমার নিজ এলাকার নগর পরিকল্পনার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন


    সমাধান নিচে তুলে ধরা হলো 

    সিন্ধু সভ্যতার পটভূমিঃ সিন্ধু নদের অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল বলে এই সভ্যতার নাম রাখা হয় সিন্ধুসভ্যতা । সিন্ধু সভ্যতার সংস্কৃতিকে অনেক সময়ে হাগী সংস্কৃতি বা হরা সভ্যতা বলা হয়ে থাকে । এই সভ্যতার আবিষ্কার কাহিনি চমৎকার । পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলায় মহেঞ্জোদারাে শহুরে উঁচু মাটির টিবি ছিল । স্থানীয় লােকেরা বলত মরা মানুষের টিৰি ( মহেঞ্জোদারাে কথাটি মানেও তাই ।

    ভৌগােলিক অবস্থান : উপমহাদেশের প্রাচীনতম সিন্ধুসভ্যতার বিস্তৃতি বিশাল এলাকা জুড়ে । মহেঞ্জোদারাে ও হরপ্পাতে এই সভ্যতার নিদর্শন সবচেয়ে বেশি আবিষ্কৃত হয়েছে । তা সত্ত্বেও ঐ সভ্যতা শুধু সিন্ধু অববাহিকা বা ঐ দুটি শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না । পাকিস্তানের পাঞ্জাব , সিন্ধু প্রদেশ , ভারতের পাঞ্জাবি , রাজস্থান , গুজরাটের বিভিন্ন অংশে এই সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে । ঐতিহাসিকরা মনে করেন , পাঞ্জাব থেকে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভৌগােলিক এলাকা জুড়ে সিন্ধুসভ্যতা গড়ে উঠেছিল ।

    সময়কালঃ সিন্ধুসভ্যতার সময়কাল সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে । কেউ কেউ মনে করেন , ৩৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এ সভ্যতার উত্থান - পতনের কাল । আবার কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক মনে করেন , আর্য জাতির আক্রমণের ফলে খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ১৫০০ অথবা ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে সিন্ধুসভ্যতার অবসান ঘটে । তবে , মর্টিমার হুইলার মনে করেন , এই সভ্যতার সময়কাল হচ্ছে ২৫০০ থেকে ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ।

    রাজনৈতিক অবস্থা:- সিন্ধুসভ্যতার জনগণের রাজনৈতিক জীবন ও শাসনপ্রণালি সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না । মহেঞ্জোদারাে ও হরপ্পার নগর বিন্যাস প্রায় একই রকম ছিল । এগুলাের ধ্বংসাবশেষ দেখে নিশ্চিতভাবে বােঝা যায় যে , পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী উঁচু ভিতের উপর শহরগুলাে নির্মাণ করা হয়েছিল । শহরগুলাের এক পাশে উঁচু ভিত্তির উপর একটি করে নগরদুর্গ নির্মাণ করা হতাে । চারদিক থাকত প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত । নগরের শাসনকর্তারা নগর দুর্গে বসবাস করতেন । প্রশাসনিক বাড়িঘরও দুর্গের মধ্যে ছিল । নগরের ছিল প্রবেশদ্বার । দুর্গ বা বিরাট অট্টালিকা দেখে মনে হয় একই ধরনের কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা যুগ যুগ ধরে নগর দুটিতে প্রচলিত ছিল । এই প্রশাসন জনগণের জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করত ।

    সামাজিক অবস্থা:- সিন্ধুসভ্যতার যুগে মানুষ সমাজবদ্ধ পরিবেশে বসবাস করত । সেখানে একক পরিবার পদ্ধতি চালু ছিল । সিন্ধুসভ্যতার যুগে সমাজে শ্রেণিবিভাগ ছিল । সব লােক সমান সুযােগ - সুবিধা পেত না । সমাজ ধনী ও দরিদ্র দুই শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল । কৃষকরা গ্রামে বসবাস করত । শহরে ধনী এবং শ্রমিকদের জন্য আলাদা - আলাদা বাসস্থানের নিদর্শন পাওয়া গেছে । পােশাক - পরিচ্ছদের জন্য তারা মূলত সুতা ও পশম ব্যবহার করত । সিন্ধুসভ্যতার সমাজব্যবস্থা ছিল মাতৃতান্ত্রিক । নারীরা খুবই শৌখিন ছিল । তাদের প্রিয় অলঙ্কারের মধ্যে ছিল হার , আংটি , দুল , বিছা , বাজুবন্ধ , চুড়ি , বালা , পায়ের মল ইত্যাদি ৷ তারা নকশা করা দীর্ঘ পােশাক পরত । পুরুষরাও অলঙ্কার ব্যবহার করত ।

    অর্থনৈতিক অবস্থা:- সিন্ধুসভ্যতার অর্থনীতি ছিল মূলত কৃষিনির্ভর । তাছাড়াও অর্থনীতির আর একটি বড় দিক ছিল পশুপালন । কৃষি ও পশুপালনের পাশাপাশি মৃৎপাত্র নির্মাণ , ধাতুশিল্প , বয়নশিল্প , অলঙ্কার নির্মাণ , পাথরের কাজ ইত্যাদিতেও তারা যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছিল । এই উন্নতমানের শিল্পপণ্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সেখানকার বণিকরা বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যােগাযােগ রক্ষা করে চলত । বণিকদের সাথে আফগানিস্তান , বেলুচিস্তান , মধ্য এশিয়া , পারস্য , যেসসাপটেমিয়া , দক্ষিণ ভারত , রাজপুতনা , গুজরাট প্রভৃতি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যােগাযােগ ছিল ।


    সিন্ধু সভ্যতার ( মহেঞ্জোদারাে ও হরপ্পা ) নগরের সাথে আমার এলাকার নগর পরিকল্পনার সাদৃশ্য নিম্নে দেয়া হলােঃ ১ ) রাস্তাঘাটঃ প্রাচীন সভ্যতা হলেও সিন্ধু সভ্যতার নগরী ভিতর দিয়ে পাকা রাস্তা ছিল । আমার এলাকার রাস্তাগুলাে পাকা । 

    । ২ ) জল নিষ্কাশনঃ সিন্দু সভ্যতায় জল নিষ্কাশন এর জন্য ছােট ছােট নর্দমা গুলাে কে বড় নর্দমার সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হতাে । আমাদের এলাকায় কিছু কিছু ছােট ছােট নর্দমা রয়েছে যেগুলােকে বড় খালের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে । 

    ৩ ) আমাদের এলাকার পাকা রাস্তার ধারে বাতি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে রাতের বেলায় লােকজন স্বাচ্ছন্দ্যের চলাফেরা করতে পারে । এমনিভাবে সিন্ধু সভ্যতার হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারাে নগরীর রাস্তার পাশে সারিবদ্ধ ভাবে ল্যাম্পপােস্ট ব্যবহার করা হতাে ।

    সিন্ধু সভ্যতার ( মহেঞ্জোদারাে ও হরপ্পা ) নগরের সাথে আমার এলাকার নগর পরিকল্পনার বৈসাদৃশ্য নিম্নে দেয়া হলাে

    ১ ) ঘরবাড়িঃ সিন্ধু সভ্যতার ঘরবাড়ি সবই পােড়ামাটি বা রােদে পােড়ানাে ইট দিয়ে তৈরি ছিল । 
    আমাদের এলাকায় সমস্ত বাড়ি ইটের তৈরি নয় কিছু কিছু বাড়ি রয়েছে টিনের তৈরি । আবার কিছু কিছু বাড়ি রয়েছে ইটের তৈরি দালান ।
    ২ ) খােলা জায়গাঃ সিন্ধু সভ্যতায় প্রত্যেক বাড়িতে খােলা জায়গা ছিল ।  কিন্তু বর্তমানে বিপুল হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আমাদেরকে অল্প জায়গাতেই অনেক লােকের বসবাস করতে হয় । যার ফলে আমাদের এলাকায় প্রত্যেক বাড়িতে খােলা যায়গা রাখা সম্ভব নয় । তবে কিছু কিছু বাড়িতে খােলা জায়গা রয়েছে ।
    ৩ ) ঘরবাড়ি নির্মাণের স্থানঃ সিন্ধু সভ্যতার প্রায় সমস্ত বাড়িগুলাে নির্মিত ছিল উঁচু ভিতের উপর ।আমাদের এলাকায় তেমন ঘরবাড়ি দেখা যায় না । 

    Tag:এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (২য় সপ্তাহ), ২০২১ সালের ২য় সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর,সিন্ধু সভ্যতার আর্থ - সামাজিক অবস্থার বিশ্লেষণপূর্বক এ সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সাথে তােমার নিজ এলাকার নগর পরিকল্পনার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন

                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com



    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook এবং Telegram পেজ)