You can easily download all types of PDF from our website for free.Only we share all types of updated PDF. If there is any problem to download our PDF file, you can easily contact us and solve it. So without delay download your desired PDF file immediately.
আরো দেখুন
- বাংলাদেশের ৬৪ জেলার রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২৪
- সেহরি ও ইফতারের দোয়া
- যাকাত দেওয়ার নিয়ম ২০২৪
- ১ ভরি স্বর্ণের যাকাত কত টাকা ২০২৪
- ১ লাখ টাকার যাকাত কত টাকা ২০২৪
- ফিতরা কত টাকা ২০২৪
- জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
- অনলাইনে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম
- পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ
- পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
- পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
দেশগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা রচনা
ভূমিকা : বাংলাদেশে মােট জনসংখ্যার অর্ধেকই হচ্ছে নারী । তাই দেশের সুষম আর্থসামাজিক উন্নয়ন অর্থাৎ জাতীয় উন্নয়নে নারীর সমান অংশগ্রহণের বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । জীবনধারনের জন্যে অত্যাবশ্যকীয় সব কাজ অর্থাৎ গৃহস্থালি বা সাংসারিক কর্মকাণ্ডের বােঝা বহন করা , সন্তান ধারণ এবং মা হিসেবে । ভবিষ্যতের উপযুক্ত নাগরিক ' গড়ে তােলাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতীয় অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে নারীসমাজ । তারই অকুণ্ঠ স্বীকৃতি মেলে মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের নারী কবিতায় -
‘ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর , অর্ধেক তার করিয়াছে নারী , অর্ধেক তার নর ।
বাংলাদেশে নারীর অবস্থান : সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমে নারীর ভূমিকা ও অবদান স্বীকৃতি পেলেও সার্বিকভাবে উন্নয়ন কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণের যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি । শিক্ষার অভাবে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারছে না । পুরুষশাসিত প্রথাবদ্ধ সমাজে নারীরা লিঙ্গবৈষম্য , সামাজিক নিপীড়ন ও বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার । জনসংখ্যার অর্ধেক হলেও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায় থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা খুবই সীমিত । ব্যাপক সংখ্যক নারী এখনও অবরােধপ্রথার অন্তরাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি । অশিক্ষা , দারিদ্র্য ও প্রথাবদ্ধ ধ্যান - ধারণার কারণে নারীরা স্বাবলম্বী হতে পারছে না , তারা পুরুষের ওপর নির্ভরশীল । হত্যা , ধর্ষণ , শারীরিক নির্যাতন , অ্যাসিড নিক্ষেপের মতাে নির্মম ঘটনার শিকার অসংখ্য অসহায় নারী । সংবিধানে নারী পুরুষের সমানাধিকারের বিষয়টি স্বীকৃত হলেও ধর্মীয় ও পারিবারিক আইনে নারীর সার্বভৌমত্ব ও সমানাধিকার স্বীকৃত নয় । শিক্ষা ক্ষেত্রে , চাকরির ক্ষেত্রে এবং প্রাতিষ্ঠানিক - অপ্রাতিষ্ঠানিক নানা সুযােগ - সুবিধার ক্ষেত্রে নারী সমাজ প্রতিনিয়তই বঞ্চিত । সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন আন্দোলন - সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজে সচেতনতা বাড়ছে । শিক্ষা ক্ষেত্রে , অর্থনৈতিক , সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রমশ বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ ।
নারী আন্দোলন ও নারী উন্নয়ন : মােট জনসংখ্যার অর্ধেক হিসেবে নারীসমাজ অর্ধেক জনশক্তির প্রতিনিধি । এ নিশাত পশ্চাৎপদ , অশিক্ষিত এবং অসচেতন থাকলে জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হয় । এ উপলব্দি থেকেই । নারীসমাজকে সচেতন করে তুলতে , সমাজের নানান অদৃশ্য শৃঙ্খল থেকে নারীদের মুক্ত করতে এবং নারীর । মতায়নের লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে বিভিন্ন নারী সংগঠন । ফলে পুরুষ নিয়ন্ত্রিত সমাজ ও রাষ্ট্র । ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে নারীর অধিকার ও স্বীকৃতির বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে । ১৯৭৫ সালে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হয় ১ ম বিশ্ব নারী সম্মেলন । ১৯৭৬-৮৫ সাল ১ ম নারী দশক হিসেবে ঘােষণা করে প্রতিটি দেশে নারীর স্বার্থ । সংরক্ষণে জাতীয় কমিটি প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন সংস্থায় নারী ইউনিট গড়ে তােলার সুপারিশ করে জাতিসংঘ । ফলে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সরকার নারী উন্নয়ন বিভাগ বা নারী মন্ত্রণালয় চালু করে । আশির দশকের শেষে জাতিসংঘ , বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দাতা সংস্থায় নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে উন্নয়নে নারী বিভাগ চালু হয় । জাতিসংঘের দ্বিতীয় উন্নয়ন দশক ( ১৯৭০-৮০ ) থেকে নারী ইস্যু এবং উন্নয়নে নারী আন্দোলনটি বিকাশ লাভ করে ।
জাতি গঠনে নারীর ভূমিকা : নারী সমাজের হাতে যেমন থাকে পরিবারের চাবি , তেমনি জাতীয় জীবন গঠনের মূল চাবিকাঠিও নারীর হাতেই বিদ্যমান । শিশুর চরিত্র গঠনে মায়ের ভূমিকাই প্রধান । সচেতন নারীর পক্ষেই সম্ভব সমাজকে সুযােগ্য সন্তান উপহার দেয়া । এছাড়া সংসারের ভালােমন্দ সবকিছুর প্রতি নজর রেখে নারী স্বামীকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে ব্যাপকভাবে । জাতীয় উন্নয়ন মানে সমাজের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন । এক্ষেত্রে তাই পরিবারে নারীর এ ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । সেই লক্ষ্যে একজন নারীকে অবশ্যই শিক্ষিত এবং সচেতন নাগরিক হতে হবে । কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা তাদের স্বীয় মেধা ও যােগ্যতার ভিত্তিতে পুরুষের কাধে কাধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে । বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নারীদের সদর্প উপস্থিতি তারই প্রমাণ বহন করে । শ্রমিক ও কর্মজীবী নারীদের অধিকাংশই কাজ করছে পপাশাকশিল্পে । এর পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামীণ অর্থনীতি - নির্ভর কর্মকাণ্ড , পরিবহন , শিক্ষকতা , বিপণন , বিপণিকেন্দ্র ইত্যাদিতেও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে । তাছাড়া আইনজীবী , সাংবাদিকতা , আইন প্রয়ােগকারী বাহিনী ইত্যাদি চ্যালেঞ্জিং পেশাতেও নারীরা যুক্ত হচ্ছে । নানা পেশায় নারীর এই অংশগ্রহণ যত বাড়বে , একটি সুদৃঢ় জাতি গঠনের পথে আমরা ততই দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব ।
নারীর অদৃশ্য অবদান ; জীবনধারণের জন্যে অত্যাবশ্যকীয় সব কাজ যেমন , গৃহস্থালি অর্থাৎ সাংসারিক কর্মকাণ্ডের বােঝা বহন করে নারীসমাজ । জাতীয় অর্থনীতিতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । কিন্তু অর্থনৈতিক মূল্য নেই বলে তা স্বীকৃতিহীন । গৃহশ্রম তাই জাতীয় আয়ের অন্তর্ভুক্ত হয় না । ১৯৯০ সালে জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে , নারীরা সংসারে যে কাজ করে তার মূল্য দিতে হলে এবং তা সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় আয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হলে বিশ্বের মােট উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাবে বিশ থেকে ত্রিশ শতাংশ । জাতীয় উন্নয়নে নারীর এ অবদানও ছােট করে দেখার কোনাে অবকাশ নেই ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারীসমাজ : বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম বাঙালি জাতির পরিচয় । জাতি গঠনে নারীসমাজের কথা বলতে গেলে অবধারিতভাবে এসে যায় মুক্তিযুদ্ধে নারীসমাজের গৌরবােজ্জ্বল অবদানের কথা । মুক্তিযুদ্ধে নারীসমাজ নানাভাবে অংশ নেয় । যুদ্ধের শুরুতে প্রতিটি অঞলে যে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় তাতে মহিলা ও ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল । তারামন বিবি , কাকন বিবি , রহিমা বেগমসহ নাম জানা অনেক নারী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন । অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন , আহার যুগিয়েছেন , আহত মুক্তিযােদ্ধাদের সেবা শুশ্রুষা করেছেন । জীবন বাজি রেখে হানাদার বাহিনী সম্পর্কে গােপনে মুক্তিযােদ্ধাদেরকে বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করেছেন । মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে সম্রম হারিয়েছেন প্রায় দুই লক্ষ নারী । নারীর এ আত্মত্যাগ বাঙালি জাতির কাছে এক বিশাল ঋণ । শুধু মুক্তিযুদ্ধই নয় ব্রিটিশ উপনিবেশবাদ বিরােধী - মুক্তি আন্দোলন , ভাষা আন্দোলন , স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এদেশের নারীসমাজের বহুমাত্রিক অবদানে সমৃদ্ধ হয়েছে ।
জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের প্রতিবন্ধকতা : বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় । নারীর ভূমিকা এখনও সীমিত । তাই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও নারীসমাজ নানা প্রতিকূলতার । সম্মুখীন । এর মধ্যে রয়েছে
১. শ্রমবাজারে নারীর সীমিত প্রবেশাধিকার ;
২. কাজে নিয়ােগের ক্ষেত্রে নারীরা বৈষম্যের শিকার ; ৩. মজুরি বৈষম্যের শিকার ;
৪. গণতন্ত্রে নারীর অধিকার এখনও অবিকশিত ;
৫. সঠিক সমন্বয়হীনতার অভাবে গ্রামাঞ্চলে নারীর স্বকর্মসংস্থানের অনেক কর্মসূচি নারীর কাছে পৌছায় । ;
৬. সামাজিক অবস্থান ও মানসিক দৈন্য এখনও শিক্ষা থেকে নারীকে দূরে সরিয়ে রেখেছে ;
৭. ফতােয়াবাজ মৌলবাদীদের অপতৎপরতার শিকার হচ্ছে নারীরা এখনও ।
প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায় : বাংলাদেশে জাতীয় উন্নয়নের সাথে জড়িয়ে আছে নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি । ক্ষমতায়ন অর্থাৎ বস্তুগত , মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই নারীসমাজ অর্থনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অংশ নিতে পারবে । আর এর মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব । শ্রমবাজারে নারীর সমান প্রবেশাধিকার ও সমান মজুরি নিশ্চিত করতে হবে । শিক্ষার সুযােগ পৌছে দিতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে । সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ও গণতন্ত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে । ফতােয়াবাজদের অপতৎপরতা বন্ধ করে সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে নারীকে সচেতন করতে হবে । সর্বোপরি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বে নারীর ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে ।
উপসংহার : দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সমাজ , পরিবার ও রাষ্ট্রীয় পরিসরে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অর্থবহ অংশগ্রহণের কোনাে বিকল্প নেই । তাই নারীর জন্য সুশিক্ষার সুযােগ সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তারা যেন নিঃশঙ্কচিত্তে নিজেদের যােগ্যতার পরিচয় রাখতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে । গঠনে নারীর ভূমিকার যথাযােগ্য মূল্যায়ন করে নারীকে তার যথার্থ সম্মান এবং উপযুক্ত সহযােগিতা করার দায়িত্ব আমাদের সবার ।
দেশগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা
Desh Ghotone Narisomajer Vumika
Tag: দেশগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা রচনা - দেশগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা, Desh Ghotone Narisomajer Vumika Rochona, একবিংশ শতাব্দীর নারী সমাজ, দেশগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা অনুচ্ছেদ রচনা, রচনা - দেশগঠনে নারীসমাজের ভূমিকা