আসছালামু আলাইকুম সম্মানিত পাঠকবৃন্দ সবাইকে আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আসা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। প্রিয় পাঠক ঈদুল আযহা কোরবানির ঈদ ১৭ জুন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে। কোরবানির গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ভাগে কোরবানি দেওয়া বা নামে কোরবানি দেওয়ার। অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি কারাকে ভাগে কোরবানি দেয়া বলা হয়।
কোরবানি কত জনে দেওয়া যায়
ভেড়া, দুম্বা, ছাগল দ্বারা এক পরিবারের পক্ষ থেকে একটা পশু কোরবানি করতে পারবেন। আর উট, গরু, মহিষ দ্বারা সাত জনের নামে সাতটি কোরবানি করা যাবে।
কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম
অংশীদারি ভিত্তিতে কোরবানি করার দুটি পদ্ধতি হতে পারে-
১.সওয়াবের ক্ষেত্রে অংশীদার হওয়া। যেমন-কয়েক জন মুসলিম মিলে একটি বকরি ক্রয় করল। অত:পর একজনকে ঐ বকরির মালিক বানিয়ে দিল। বকরির মালিক বকরিটি কোরবানি করল। যে কজন মিলে বকরি খরিদ করেছিল সকলে সওয়াবের অংশীদার হলো।
২. মালিকানার অংশীদারির ভিত্তিতে কোরবানি। দুজন বা ততোধিক ব্যক্তি একটি বকরি কিনে সকলেই মালিকানার অংশীদার হিসেবে কোরবানি করল। এ অবস্থায় কোরবানি শুদ্ধ হবে না।
উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক হতে পারবে। সাতের অধিক শরীক হলে কারো কোরবানি সহীহ হবে না। সহীহ মুসলিম শরিফে হযরত জাবের (রা.) বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে হজ করেছিলাম, তখন আমরা সাতজন করে একটি উট এবং একটি গরুতে শরিক হয়ে কোরবানি করেছি। উট, গরু ও মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যে কোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ।
কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় কোরবানি দাতার নাম বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে কোরবানিটি যার পক্ষ থেকে করা হচ্ছে তার নাম পরিষ্কার ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া। কিছু হাদিসে (দোয়া পড়ে) কোরবানি করার আগে কার পক্ষ থেকে কোরবানি করা হচ্ছে তার নাম বলে তারপর আল্লাহুম্মা আকবর বলে জবাই করার সমর্থন পাওয়া যায়। যদিও তা বাধ্যতামূলক হিসেবে নয়। যেমন হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) যখন কোরবানির দিন দুটি শিংওয়ালা মোটাতাজা বকরি জবাই করতেন।
কোরবানির পশু শোয়ানোর পর তিনি পড়তেন ‘ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাযি ফাতারাছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহ ইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন।...বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর। (আবু দাউদ: ২৭৮৬; ইবনে মাজাহ: ৩১২১)
দোয়ার অর্থ: নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ—সবই বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি এ কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আর আমি আত্মসমর্পণকারীদের একজন। আল্লাহর নামে, আল্লাহ সবচেয়ে মহান।’
ভাগে কোরবানির পশুতেও জবাইয়ের সময় সবার নাম বলা যায়। যেহেতু যিনি জবাই করছেন তিনি সাতজন ব্যক্তির প্রতিনিধি হয়ে জবাই করছেন। তাই কোরবানি করার সময় তাদের পক্ষ থেকে তিনি কোরবানি করছেন, এ কথাটি পরিষ্কার করার জন্য নামগুলো বলা যায়। এতে দোষের কিছু নেই।
তবে মুখে সব শরিকের নাম বলা জরুরি বিষয় নয়; বরং জবাইকারী শুধু পশুটির মালিকদের নামে কোরবানি করছেন- এতটুকু মনের মাঝে রেখে জবাই করলেও কোরবানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে। তাই নাম বলা নিয়ে জবাইকারীকে পেরেশানি করার প্রয়োজন নেই। (ফতোয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ: ১৫/৫১৭; বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৭১)
স্মরণ রাখতে হবে, কাদের পক্ষ থেকে পশু কোরবানি করা হচ্ছে, সেটি পশু ক্রয়ের সময়ই নির্ধারিত হয়ে গেছে। তাই কোরবানিদাতার নাম যে উচ্চারণ করতেই হবে তা নয়। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, নবীজি কোরবানির পশু জবাই করার সময় মুখে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবর বলেছেন।
সুতরাং, বোঝা গেলো—কোরবানির আগে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নামগুলো পাঠ করা যেতে পারে, আবার না করলেও অসুবিধা নেই। এভাবে উল্লেখ করলেও হবে যে, আমরা অমুক বলছি, আমাদের কোরবানি কবুল করুন, অথবা সবার তরফ থেকে কোরবানি কবুল করুন। (তথ্যসূত্র: সহিহ বুখারি: ৫৫৫৮,সহিহ মুসলিম: ১৯৬৬)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাহ সমর্থিত নিয়মে কোরবানির পশু জবাই করার তাওফিক দান করুন। সবার কোরবানিকে তিনি কবুল করুন। আমিন।
Tag:কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম (A to z) ~ কোরবানি কত জনে দেওয়া যায় ~ কোরবানির শরিকের নিয়ম
Any business enquiry contact us
Email:-Educationblog24.com@gmail.com
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)