এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর /সমাধান ভূগোল ১ম পত্র (এসাইনমেন্ট ১) | ২০২১ সালের এইচএসসি ভূগোল এসাইনমেন্ট সমাধান (১ম পত্র)


    ২০২১ সালের এইচএসসি ভূগোল এসাইনমেন্ট সমাধান (১ম পত্র)


    শিরোনামঃ পৃথিবীর গঠন
    সমাধানঃ

    ক ) ভূ - অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্তরের বিভাজনঃ

    জন্মের সময় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত গ্যাসপিন্ড । এই গ্যাসপিন্ড ক্রমে ক্রমে শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় । এই সময় পৃথিবীর বাইরের উপাদানগুলাে এর কেন্দ্রের দিকে জমা হয় । আর হালকা উপাদানগুলাে ভরের তারতম্য অনুসারে নিচের থেকে উপরে স্তরে স্তরে জমা হয় । পৃথিবীর এই বিভিন্ন স্তরকে মন্ডল বলে । উপরের স্তরটিকে অশ্মমন্ডল বলে । অশ্মমন্ডলের উপরের অংশ ভূত্বক নামেও পরিচিত ।

    ভূত্বক ও পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন চিত্র সহকারে বর্ণনা করা হলােঃ

    ভূত্বক ও পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন এর বর্ণনা নিম্নে প্রদান করা হলােঃ

    ১। অশ্মমণ্ডলঃ 
    ভূপৃষ্ঠের উপরের অংশে যে শিলার কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই অশ্মমণ্ডল বা শিলা মন্ডল । এটি নানা প্রকারের শিলা ও খনিজ উপাদান দ্বারা গঠিত । ভূ - অভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় অশ্বমন্ডলের পূরত্ব সবথেকে কম , গড়ে ২০ কিলােমিটার । ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিঃমিঃ এবং সমুদ্র তলদেশে তা মাত্র গড়ে ৫ কিঃমিঃ পুরু । সাধারনভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল ( Sial ) স্তর বলে , যা সিলিকন ( si ) ও অ্যালুমিনিয়ামের ( Al ) দ্বারা গঠিত । আর সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী যা প্রধান উপাদানে সিলিকন ( si ) ও ম্যাগনেসিয়াম ( Mg ) যা সাধারনভাবে সিমা ( sima ) নামে পরিচিত । ভূত্বক ও গুরুমণ্ডলের মাঝে একটি পাতলা স্তর আছে ।

    সাবেক যুগােস্লাভিয়ার ভূ - বিজ্ঞানী যােহােরােভিসিক ১৯০৯ সালে ভূত্বক ও গুরুমণ্ডল পৃথককারী এ স্তরটি আবিষ্কার করেন । তার নামানুসারে এ স্তরটি মােহােবিচ্ছেদ নামে পরিচিত । 

    • ভূত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলােমিটারে ৩০ ° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ে । 
    • অশ্বমন্ডল হলাে পৃথিবীর উপরের স্তর । 
    * অশ্বমন্ডলের উপরিভাগে দেখা যায় সমভূমি , মালভূমি , পাহাড় , পর্বত , নদী - সাগর , মহাসাগর ইত্যাদি ।

    ২ । গুরুমন্ডলঃ 
    অশ্বমন্ডলের নিচে প্রায় ২২৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত স্তরকে গুরুমন্ডল বলে । গুরুমন্ডল মূলত ব্যাসল্ট ( Basalt ) শিলা দ্বারা গঠিত । এই অংশে সিলিকা , ম্যাগনেশিয়াম , লােহা , কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত ।
    গুরুমন্ডলের দুইটি স্তর । যথা 

    ১।উর্ধ্ব গুরুমন্ডল 
    ২। নিম্ন গুরুমন্ডল 
    উর্ধ্ব গুরুমন্ডল ৭০০ গভীর । এই মন্ডল প্রধানত আয়রন অক্সাইড , ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড ও সিলিকন অক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত । নিম্ন গুরুমন্ডল ২১৮৫ কিঃমিঃ । এই মন্ডল প্রধানত লােহা ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট দ্বারা গঠিত।

    ৩। কেন্দ্রমন্ডলঃ 
    গুরুমন্ডলের নিচে হতে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ৩৪৮৬ কিঃমিঃ পর্যন্ত স্তরকে কেন্দ্রমন্ডল বলে । কেন্দ্রমন্ডল লৌহ , নিকেল , পারদ , সীসা প্রভৃতি কঠিন ও ভারি পদার্থ দ্বারা গঠিত । ভূকম্পন তরঙ্গের সাহায্যে জানা গেছে যে , কেন্দ্রমণ্ডলের একটি তরল বহিরাবরণ আছে যা প্রায় ২২৭০ কিমি পুরু এবং একটি কঠিন অন্তঃভাগ আছে যা ১২১৬ কিমি পুরু । প্রধান উপাদান লােহা ( Fe ) ও নিকেল ( Ni ) , যা নিফে ( NiFe ) নামে পরিচিত ।

    খ ) পর্বতের প্রকারভেদঃ 

    পর্বত ( Mountains ) : 
    সমুদ্রতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের বেশি উঁচু সুবিস্তৃ ও খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্থূপকে পর্বত বলে । কোনাে কোনাে পর্বত বিচ্ছিন ভাবে অবস্থান করে । যেমন- পূর্ব আফ্রিকার কিলিমানজারাে । আবার কিছু পর্বত অনেকগুলাে পৃথক শৃঙ্গসহ ব্যাপক এলাকা জুড়ে অবস্থান করে । যেমন- হিমালয় পর্বতমালা । 
    প্রকারভেদঃ। 
    উৎপত্তিগত বৈশিষ্ট্য ও গঠনপ্রকৃতির ভিত্তিতে প্রধান প্রধান পর্বত গুলাে নিম্নে উপস্থাপন করা হলােঃ

    ভঙ্গিল পর্বতঃ
    ভঙ্গ বা ভাজ থেকে ভঙ্গিল শব্দটির উৎপত্তি । কোমল পাললিক শিলায় ভাজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয়েছে তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে ।


    আগ্নেয়গিরি থেকে উদগিরিত পদার্থ সঞ্চিত ও জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয় । একে সঞ্চিত পর্বতবলে । এই পর্বত সাধারণত মােচাকৃতির ( Conical )

    ভূআলােড়নের সময় ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরে প্রসারণ এবং সংকোচনের সৃষ্টি হয় । এই প্রসারণ এবং সংকোচনের জন্য ভূত্বকে ফাটলের সৃিষ্ট হয় । 
    কালক্রমে এ ফাটল বরাবর ভূত্বক ক্রমে স্থানচ্যুত হয় একে চ্যুতি বলে । ভূত্বকের এ স্থানচ্যুতি কোথাও উপরের দিকে কোথাও নিচের দিকে চ্যুতির ফলে উঁচু হওয়া অংশকে স্থূপ পর্বত বলে ।

    পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে গলিত শিলা বা ম্যাগমা বিভিন্ন গ্যাসের দ্বারা স্থানান্তরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে বের হয়ে আসার চেষ্টা করে  কিন্তু কোনাে কোনাে সময় বাঁধা পেয়ে এগুলাে ভূপৃষ্টের উপরে এসে ভূত্বকের নিচে জমাট বােধ । 

    উধ্বমুখী চাপের কারনে স্ফীত হয়ে ভূত্বকের অংশ বিশেষ গম্বুজ আকার ধারন করে । এভাবে সৃষ্ট পর্বতকে ল্যাকোলিথ পর্বত বলে ।

    ক্ষয়জাত পর্বত - 
    বহু যুগ আগে গঠিত সুউচ্চ ও সুবিশাল পর্বতশ্রেণী অথবা সুউচ্চ মালভূমি কোটি কোটি বছর ধরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ঘাত - প্রতিঘাতে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে অনুচ্চ ও বিক্ষিপ্ত পর্বতের অবস্থান করলে তাকে ক্ষয়জাত পর্বত বলে ।

    গ ) বিভিন্ন পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ 

    ১ ) ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ 
    * ভঙ্গিল পর্বতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে ভাজ । 
    *ভঙ্গিল পর্বতে অনেক শৃঙ্গ থাকে । 
    • ভঙ্গিল পর্বতের শিলাসমূহ স্তরে স্তরে সজ্জিত । এ পর্বতের মধ্যে স্থানে স্থানে সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর জীবাশ্ম পাওয়া যায় । 
    *স্তরযুক্ত নরম পাললিক শিলায় গঠিত । এ পর্বতের শিলাস্তরের মধ্যে মাঝে মাঝে আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা দেখা যায় ।
    *পৃথিবীর দীর্ঘ এবং উচ্চতম পর্বতগুলাে এ শ্রেণির । এ পর্বতে দীর্ঘ তিরেখা দেখা যায় ।

    ২ ) আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ 
    *এ জাতীয় পর্বত সাধারণত মোচাকৃতির হয়। 
    *এ পর্বতের উচ্চতা ও ঢাল মাঝারি ধরনের হয় । 
    * এ জাতীয় পর্বত আগ্নেয় দ্বারা গঠিত ।  
    * কখনাে কখনাে এ জাতীয় পর্বত অল্প স্থান জুড়ে খাড়া ঢালবিশিষ্ট হতে পারে ।

    ৩ ) চ্যুতি - স্তুপ পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ  
    • চ্যুতি - পপর্বতগুলাে সাধারণত বহুদূর বিস্তৃত হয় না অর্থাৎ মহাদেশের বিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থান করে না ।
    * চ্যুতি - সুপ পর্বতের ঢাল খুব খাড়া হয় । এ পর্বত ধীরে ধীরে উঁচু হয় না । ভূপৃষ্ঠ থেকে হঠাৎ মাথা তুলে দাঁড়ায় ভূপৃষ্ঠ থে 
    * এ পর্বতের শৃঙ্গ থাকে না । এর চূড়া সাধারণত চ্যাপ্টা আকৃতির হয় । 
    * চ্যুতি - তূপ পর্বত খুব বেশি উঁচু হয় না ।


    ঘ ) বিভিন্ন পর্বতের উদাহরণঃ 

    ১ ) ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ-- এশিয়ার হিমালয় , ইউরােপের আল্পস , উত্তর আমেরিকার রকি , দক্ষিন আমেরিকার আন্দিজ পর্বতমালা ।

    ২ ) আগ্নেয় পর্বতের উদাহরণ - ইতালির ভিসুভিয়াস , কেনিয়ার কিলিমানজারাে , জাপানের ফুজিয়ামা , ফিলিফাইনের পিনাটুবাে । 

    ৩ ) চ্যুতি স্তুপ পর্বত এর উদাহরণ - ভারতের বিন্ধা ও সাতপুরা পর্বত , জার্মানির ব্লাক ফরেস্ট , পাকিস্থানের লবন পর্বত ।

    ৪ ) ল্যাকোলিথ পর্বতের উদাহরণ- আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের উটা প্রদেশের হেনরি পর্বত এবং ড্যাকোটা প্রদেশের ব্ল্যাক হিলস পর্বত 

    ৫ ) ক্ষয়জাত পর্বতের উদাহরণ - ভারতের রাজস্থান রাজ্যের আরাবল্লী , বিহারের রাজমহল পাহাড় , পরেশনাথ পাহাড় ইত্যাদি হল ক্ষয়জাত পর্বতের উদাহরণ ।



    এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর /সমাধান ভূগোল ১ম পত্র (এসাইনমেন্ট ১)



    Tag: এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর /সমাধান ভূগোল ১ম পত্র (এসাইনমেন্ট ১),  ২০২১ সালের এইচএসসি ভূগোল এসাইনমেন্ট সমাধান (১ম পত্র)

                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com



    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook এবং Telegram পেজ)