বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও তার প্রতিকার বিষয়ক প্রতিবেদন
বরাবর
নির্বাহী পরিচালক
দুর্নীতি দমন কমিশন , ঢাকা ।
বিষয় : বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও তার প্রতিকার বিষয়ক প্রতিবেদন ।
সূত্র : দুদক / ১০ ( ৩ ) / ২০১৬
জনাব ,
সবিনয় নিবেদন এই যে , উপযুক্ত সূত্র ও বিষয়ের আলােকে বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও তার প্রতিকার সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি আপনার সদয় অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হলাে । দুর্নীতি প্রকৃত গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম অন্তরায়। আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি বিদ্যমান। দুর্নীতির প্রধান কয়েকটি ধরন হলাে— ঘুষ , অবৈধ উপায়ে সুবিধা লাভ , চাঁদাবাজি , সরকারি কোষাগার থেকে চুরি ডাকাতি , অবৈধ , পৃষ্ঠপােষকতা , স্বজনপ্রীতি , অবৈধভাবে চাকরি প্রদান , অর্থ আত্মসাৎ , কাউকে সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ বা অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ , অবৈধভাবে কোনাে কিছু ভােগ দখল ইত্যাদি । বিভিন্ন কারণে দুর্নীতি হয় । এর পেছনে যেমন ব্যক্তিগত স্বার্থ কাজ করে , তেমনি পদ্ধতিগত কিছু বিষয়ও এর এসারে ভূমিকা রাখে ।
মানুষের সীমাহীন লােভ - লালসা থেকে দুর্নীতির উৎপত্তি । বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপক যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করা । দুনীতির কোনাে জবা বদিহিতা না থাকায় দুর্নীতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে । সাধারণত নিম্নলিখিত বিষয়গুলােকে দুর্নীতির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায় আকার ধারণ করার অন্যতম কারণ হলাে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পর্যায়ে দুর্নীতির অবাধ চর্চা ও এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করা। সাধারণত নিম্নলিখিত বিষয়গুলোকে দুর্ণীতির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়ঃ-
১. ক্রমবর্ধমান ভােগবাদী প্রবণতা ও নৈতিক মূল্যবােধের অবক্ষয়ের কারণে ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ । মানসিকতা ।
২. সরকারি প্রশাসন যন্ত্রগুলােকে রাজনৈতিক দলগুলাের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা ।
৩. পিএসসির মাধ্যমে দলীয় লােকদের নিয়ােগ প্রদান করে তাদেরকে ভবিষ্যতে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করা ।
৪. দুর্নীতি দমন কমিশনসহ জবাবদিহিতা আদায়ের নিমিত্তে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলাের অকার্যকারিতা ।
৫. দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া ।
৬. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব ।
৭. কতিপয় দায়িত্বশীল ব্যক্তির সীমাহীন দুনীতি ।
তথ্যের অপর্যাপ্ততা , সরকারি কাজকর্মে স্বচ্ছতার অভাব , তথ্য প্রকাশে অনীহা , বাক স্বাধীনতার অভাব , নাক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা , সরকারের জবাবদিহিতার অভাব , দুর্বল গণতন্ত্র চর্চা , সুশীল সমাজের তৎপরতা অভাব , দুর্বল আইনের শাসন , বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অভাব , স্বল্প বেতন কাঠামাে , রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিজ বা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া , দীর্ঘদিন একই পদে একই জায়গায় কাজ করা , রাজনৈতিক দুর্বয়ান । প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার , দুর্বল আর্থ - সামাজিক কাঠামাে ইত্যাদি কারণে দুর্নীতি আমাদের জাতীয় জীবন বাসা বেঁধেছে । দুর্নীতি হঠাৎ করে ঘটে না । এটি বিস্তার লাভ করতে যথেষ্ট সময় নেয় । রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে যারা ক্ষমতাবান তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করে । কাজেই শুরুতেই যদি দুনীত প্রতিরােধ করা না যায় , তাহলে এটি ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং ধীরে ধীরে পুরাে শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে । পড়ে । দুর্নীতি প্রতিরােধে অতিসত্বর কিছু উদ্যোগ নেওয়া উচিত ।
যেমন :
১. দুর্নীতি দমন কমিশনকে সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত হতে হবে
২. দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের শাস্তি প্রদান করতে হবে
৩. দুর্নীতি প্রতিরােধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে
৪. সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে উন্নত পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে ।
৫. দুর্নীতি দমনে জাতীয় কমিটি গঠন করতে হবে এ ছাড়া দুর্নীতি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়ােজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা , সর্বত্র সততার আৰি । স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রয়ােজন । দুর্নীতি রােধে নাগরিক সমাজ , বিশেষ করে তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা করতে হবে । কারণ সমাজ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামাের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে তরুণরা সব সময় সােচ্চার । দুর্নীতির বিরুদ্ধে তীব্র সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে নিঃস্বার্থ ও দুঃসাহসী তারুণ্যের বলিষ্ঠ ভূমি কোনাে বিকল্প নেই ।
নিবেদক
হুমায়ুন কবীর
প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা
দুর্নীতি দমন কমিশন ,ঢাকা ।
Tag: প্রতিবেদন - বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও তার প্রতিকার, বাংলাদেশে দুর্নীতির কারণ ও তার প্রতিকার বিষয়ক প্রতিবেদন রচনা, প্রতিবেদন কি,
Any business enquiry contact us
Email:-Educationblog24.com@gmail.com
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)