এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর/সমাধান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ষষ্ঠ সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট ১ | এইচএসসি ষষ্ঠ সপ্তাহের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ | HSC ICT Assignment Answer 2022 (6th Week)

এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর/সমাধান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ষষ্ঠ সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট ১ | এইচএসসি ষষ্ঠ সপ্তাহের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ | HSC ICT Assignment Answer 2022 (6th Week)

       
       
     

    এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর/সমাধান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ষষ্ঠ সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট ১

      এইচএসসি ষষ্ঠ সপ্তাহের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ 

     HSC ICT Assignment Answer 2022 (6th Week

    অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম:

    তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও মানব সদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি সমূহের ব্যাখ্যা।

    শিখনফল/ বিষয়বস্তু:

    ক। প্রাত্যহিক জীবনেভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব মূল্যায়ন করতে পারবে

    খ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করতে পারবে

    নির্দেশনা/ (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
    ক। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা এবং বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ও প্রভাব

    খ। বায়োমেট্রিক্সের ধারণা, প্রকারভেদ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ

    গ। রোবটিক্সের ধারণা এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ


    ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা এবং বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ও প্রভাব


     ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা:

    হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সমন্বয়ে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে কোনো একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক বা ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক রূপায়ণ হলো ভার্চুয়াল রিয়ালিটি। অন্যভাবে বলা যায়, কৃত্রিম পরিবেশ থেকে প্রায় বাস্তবের মতো অনুভব করাকে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি বলে। কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি ও উপস্থাপন করা হয়, যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য ও বাস্তব বলে মনে হয়।

    ১৯৬২ সালে মর্টন এল হেলগি প্রথম ভার্চুয়াল রিয়ালিটির আত্মপ্রকাশ করেন তাঁর তৈরি সেন্সোরামা স্টিমুলেটর নামের যন্ত্রের মাধ্যমে।

    ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে বাস্তব অনুভব করার জন্য তথ্য আদান-প্রদানকারী বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস যেমন—মাথায় হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted Display), হাতে একটি ডাটা গ্লোভ (Data Glove), শরীরে একটি পূর্ণাঙ্গ বডি স্যুইট (BodySuit) ইত্যাদি পরতে হয়।


     বাস্তব জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ:

    প্রকৌশল ও বিজ্ঞান— বিজ্ঞানের জটিল বিষয় নিয়ে গবেষণা। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের ব্যবহার বৃদ্ধি ও সহজীকরণ। গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার। প্রয়োগবিধি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রসেসের সিমুলেশন তৈরি।

    খেলাধুলা ও বিনোদন— ভার্চুয়াল রিয়ালিটির কল্যাণে বিভিন্ন খেলাধুলার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। কম্পিউটারের সঙ্গে কোন খেলায় অংশগ্রহণ সহজ হচ্ছে। দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে ঐতিহাসিক সব ছবি। সবার কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি বা পৌরাণিক কাহিনিনির্ভর ছবি।

    কম্পিউটার ও যোগাযোগ— সার্কিট বা ডায়াগ্রাম ডিজাইন। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার তৈরি।

    ব্যবসা ও বাণিজ্যে— এর মাধ্যমে ক্রেতারা পণ্যের গুণগত মান যাচাই এবং পণ্য ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিরূপণ করতে পারে। ভোক্তা ও ক্রেতার কাছে পণ্যের ব্যবহারপদ্ধতি ও সুবিধাদি উপস্থাপন, ব্যাবসায়িক কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, উত্পাদিত বা প্রস্তাবিত পণ্যের কৌণিক উপস্থাপন।

    শিক্ষাক্ষেত্রে— এর মাধ্যমে শিক্ষার জটিল ও কঠিন বিষয়গুলো সহজে উপস্থাপন করা। পাঠদানের বিষয়টি সহজে চিত্তাকর্ষক ও হৃদয়গ্রাহী করা।

    স্বাস্থ্যসেবা— ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ব্যবহারের অন্যতম বৃহত্ ক্ষেত্র হচ্ছে চিকিত্সাবিজ্ঞান। এই প্রযুক্তিতে সিমুলেশনের মাধ্যমে জটিল সার্জারি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। চিকিত্সকদের নতুন চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা অর্জন বা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হচ্ছে।

    গেমস তৈরি— ভার্চুয়াল রিয়ালিটির ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে গেমস তৈরি করতে। বাজারে প্রচলিত বেশির ভাগ গেমসই এ মডেল অনুসরণ করে তৈরি। যেমন—ভার্চুয়াল স্পোর্টস, ভার্চুয়াল পুলিশ কপ ইত্যাদি

    ড্রাইভিং নির্দেশনা— ভার্চুয়াল রিয়ভলিটির মাধ্যমে গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ নিতে পারছে। গাড়ি চালনার বিভিন্ন বিষয়ে বাস্তব ধারণা লাভ করতে পারছে, ফলে প্রশিক্ষণার্থী দ্রুত গাড়ি চালনা শিখতে পারছে।

    সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণে— ভার্চুয়াল রিয়ালিটির প্রয়োগ করে সেনাবাহিনীতে অস্ত্র চালনা এবং আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার। রাতে যুদ্ধ পরিচালনা এবং শত্রুর অবস্থান নির্ণয়। উন্নত যুদ্ধসামগ্রীর ব্যবহার কম সময়ে নিখুঁতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান।

    বিমানবাহিনী প্রশিক্ষণে— বিমানবাহিনীতে বিমান চালনা প্রশিক্ষণ এবং প্যারাশুট ব্যবহার। মনুষ্যবিহীন বিমান পরিচালনা এবং রাডার দিয়ে শত্রু-মিত্র বিমান শনাক্তকরণ।

    নৌবাহিনী প্রশিক্ষণে— নৌবাহিনীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ও ডুবোজাহাজ চালনা। শত্রুর জাহাজের অবস্থান নির্ণয় ও রাত্রিকালীন যুদ্ধ পরিচালনায় ব্যাপকভাবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ব্যবহার করা হয়।

    নগর পরিকল্পনায়— নগর পরিকল্পনায় ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল রিয়ালিটির প্রয়োগ ঘটিয়ে নগর উন্নয়নের রূপরেখা, যাতায়াতব্যবস্থা ইত্যাদি সহজ ও আকর্ষণীয়ভাবে বর্ণনা করা যায়।

    মহাশূন্য অভিযান— ভার্চুয়াল রিয়ালিটি প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ত্রিমাত্রিক সিমুলেশন তৈরির মাধ্যমে মহাকাশ বা জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র-শিক্ষকরা সৌরজগত্ মহাকাশের গ্রহ বা গ্রহাণুপুঞ্জের অবস্থান গঠন-প্রকৃতি ও গতিবিধি গ্রহের মধ্যস্থিত বিভিন্ন বস্তু বা প্রাণের অস্তিত্ব ও উপস্থিতি সম্পর্কে সহজেই ধারণা অর্জন করতে পারে।

    ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষা—ইতিহাস- ঐতিহ্য রক্ষার জন্য জাদুঘরে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির প্রয়োগ হচ্ছে, ফলে আগত দর্শনার্থীরা তা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করছেন।


     বাস্তব জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব:

    ভবিষ্যতে যখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অনেক বেশি সহজলভ্য হয়ে যাবে, তখন তা বিনোদন থেকে শুরু করে যোগাযোগ পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যবহূত হবে। বিভিন্ন পেশা ও গবেষণায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগের ফলে সমাজে এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।

    ইতিবাচক প্রভাব

    চিকিৎসাক্ষেত্রে: উন্নত বিশ্বে ডাক্তারদের আধুনিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহূত হচ্ছে। বর্তমানে সার্জিক্যাল প্রশিক্ষণে এসআইএসটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ল্যাবরোস্কোপিক প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এই পদ্ধতিতে কম্পিউটার সিম্যুলেশন ব্যবহার করে ল্যাবরোস্কোপিক পরিচালনার বিভিন্ন কৌশল শেখানো হয়। শিক্ষানবিশ ডাক্তাররা এর ফলে অন্তত সহজে ও সুবিধাজনক উপায়ে বাস্তবে অপারেশন থিয়েটারে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ভার্চুয়াল অপারেটিং কক্ষে ছাত্ররা কৌশলগত দক্ষতা, অপারেশন এবং রোগসম্পর্কিত তাত্ত্বিক বিষয়াদির কার্যাবলি অনুশীলন করতে সক্ষম হন।

    ড্রাইভিং প্রশিক্সণে: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে আজকাল ড্রাইভিং শেখানো হচ্ছে। স্বল্প মুল্যের মাইক্রো কম্পিউটার প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ড্রাইভিং সিম্যুলেটর উন্নয়ন করা হয়েছে। কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য চালককে একটি নির্দিষ্ট আসনে বসতে হয়। চালকের মাথায় পরিহিত হেড মাউন্ডেড ডিসপ্লে সাহায্যে কম্পিউটার দ্বারা সৃষ্টি যানবাহনের অভ্যন্তরীণ অংশ এবং আশপাশের রাস্তায় পরিবেশের একটি মডেল দেখানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি হেড ট্রাকিং সিস্টেম। ফলে, ব্যবহারকারী যানবাহনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক অংশের ৩৬০হ্ন ডিগ্রি দর্শন লাভ করেন এবং কম্পিউটারসৃষ্ট পরিবেশে মগ্ন থাকেন।

    সামরিক বাহিনীতে: সামরিক বাহিনীতে অনেক বছর ধরে মিলিটারি প্রশিক্ষণে ফ্লাইট সিম্যুলেটর ব্যবহূত হয়ে আসছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে প্রচলিত ফ্লাইট সিম্যুলেটরের আরও উন্নতি সাধন করা সম্ভব। এ ছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সিমুলেটেড ওয়ার দ্বারা সেনাদের অনেক বেশি বাস্তব ও উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে।

    ব্যবসা-বাণিজ্যে: ব্যবসা-বাণিজ্যেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার করে তথ্য ও যোগাযোগব্যবস্থাকে আরও সহজ করা সম্ভব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারীকে ফাইল কেবিনেট দিয়ে কম্পিউটারের ডেক্সটপে তথ্য খুঁজতে হবে না; বরং ব্যবহারকারী নিজেই ফাইল ড্রয়ার খুলতে পারবে এবং নিজের হাতে ফাইলগুলো সাজাতে পারবে।


    নেতিবাচক প্রভাব

    ব্যয় বৃদ্ধি: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সরঞ্জামাদির চড়া দাম ও জটিলতা হচ্ছে বর্তমানে বিজ্ঞানীর প্রধান দুটি সমস্যা।

    অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভর: বর্তমান সমাজের মনুষ্যত্বহীনতা ইস্যুটি হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির আরও একটি নেতিবাচক দিক। পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের মনুষ্যত্ব ধরে রাখতে হবে এবং একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে যেন আমরা প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত না হই। কিন্তু যদি বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিস্তৃতি লাভ করে, তাহলে মানুষের পারস্পারিক ক্রিয়া উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। কারণ, মানুষ তখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা বাস্তব জীবনের চেয়েও অনেক ভালো বন্ধু এবং মনের মতো পরিবেশ পাবে। আর মানুষ যদি এভাবে কালো চশমা আর গ্লাভসকে মানুষ ও সমাজের বিকল্প হিসেবে বেছে নেয়, তাহলে মানবসমাজ বিলুপ্ত হতে আর বেশি সময় লাগবে না।

    কল্পনানির্ভর: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে মানুষ তার কল্পনার রাজ্যে ইচ্ছেমতো বিচরণ করতে পারে। ফলে, দেখা যাবে যে বেশির ভাগ সময় কাটাবে কল্পনার জগতে এবং খুব কম সময় থাকবে বাস্তব জগতে। কিন্তু এভাবে যদি মানুষ কল্পনা ও বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারে তাহলে এই পৃথিবী চরম অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হবে।

    স্বাস্থ্যের ক্ষতি: এ ছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে যে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও হানিকর। এটি মানুষের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি সাধন করে।


    বায়োমেট্রিক্সের ধারণা, প্রকারভেদ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ

     
    বায়োমেট্রিক্সের ধারণা:

    বায়োমেট্রিকস হলো বায়োলজিক্যাল ডাটা পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি। বায়োমেট্রিকস হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যেখানে কোনো ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা হয়। গ্রিক শব্দ ‘Bio’, যার অর্থ খরভব বা প্রাণ ও ‘metric’ যার অর্থ পরিমাপ করা।

    খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দে ব্যাবিলিয়ানরা ব্যাবসায়িক কাজে ছোট ছোট শুকনো কাদার খণ্ডে আঙুলের ছাপ দিয়ে থাকত। ১৮৯১ সালে আর্জেন্টিনার Juan Vucetich দিয়ে অপরাধী ধরার পদ্ধতি আবিষ্কার করার মাধ্যমে আধুনিক যুগের আঙুলের ছাপের ব্যবহার শুরু করেন।


     বায়োমেট্রিক্সের প্রকারভেদ:

    দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যথা–

    দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি:

    মুখ (Face) : মুখ বা চেহারার বৈশিষ্ট্য (facial characteristics) বিশ্লেষণ করা।

    ফিঙ্গারপ্রিন্ট (Fingerprint) : প্রত্যেকের আলাদা একক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হাতের ছাপ বিশ্লেষণ করা।

    হ্যান্ড জিওমেটরি (Hand Geometry) : হাতের গঠন (shape) এবং আঙ্গুলের দৈর্ঘ্যের মাপ বিশ্লেষণ করা।

    আইরিস (Iris) : চোখের মণির চারিপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় (colored ring) বিশ্লেষণ করা।

    রেটিনা (Retina) : চোখের পিছনের অক্ষিপটের (রেটিনার) মাপ বিশ্লেষণ করা।

    শিরা (Vein) : হাত এবং কব্জির শিরার প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করা।


    আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি

    কণ্ঠস্বর (Voice) : প্রত্যেকের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা।

    সিগনেচার (Signature) : হাতের দস্তখত বিশ্লেষণ করা।

    টাইপিং কী স্ট্রোক (Typing Keystroke) : নির্দিষ্ট কোন পাসওয়ার্ড যা টাইপ করে এন্ট্রি করা হয় এবং বিশ্লেষণ করা।



     বায়োমেট্রিক্স প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ:

    ১। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ।

    ২। অফিসের সময় ও উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ।

    ৩। পাসপোর্ট তৈরি।

    ৪। ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি।

    ৫। ব্যাংকের লেনদেনে নিরাপত্তা।

    ৬। এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ।

    ৭। আবাসিক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ।

    ৮। কম্পিউটার ডাটাবেইস নিয়ন্ত্রণ।


    রোবটিক্সের ধারণা এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ

     রোবটিক্সের ধারণা:

    রোবটিক্স একটি আন্ত:বিভাগীয় ক্ষেত্র যা কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলকে সংহত করে । রোবটিক্সের মধ্যে রয়েছে নকশা, নির্মাণ, অপারেশন এবং রোবটের ব্যবহার । রোবটিক্সের লক্ষ্য হল এমন মেশিন ডিজাইন করা যা মানুষকে সাহায্য ও সহায়তা করতে পারে। এর রোবোটিক্স সংহত ক্ষেত্র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং , তড়িৎ প্রকৌশল , তথ্য ইঞ্জিনিয়ারিং , Mechatronics, ইলেকট্রনিক্স , জৈব প্রকৌশল , কম্পিউটার প্রকৌশল , নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশল , সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত, অন্যদের মধ্যে।

    রোবটিক্স এমন যন্ত্র তৈরি করে যা মানুষের প্রতিস্থাপন করতে পারে এবং মানুষের কর্মের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে। রোবট অনেক পরিস্থিতিতে অনেক কাজে ব্যবহার করা যায়, কিন্তু আজ অনেকগুলি বিপজ্জনক পরিবেশে ব্যবহার করা হয় (তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিদর্শন, বোমা শনাক্তকরণ এবং নিষ্ক্রিয়করণ সহ), উৎপাদন প্রক্রিয়া, বা যেখানে মানুষ বাঁচতে পারে না (যেমন মহাকাশে, পানির নিচে, উচ্চ তাপে, এবং পরিষ্কার এবং বিপজ্জনক পদার্থ এবং বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ)। রোবট যে কোন রূপ ধারণ করতে পারে, কিন্তু কিছু কিছু মানুষের চেহারায় সাদৃশ্যপূর্ণ। এটি কিছু প্রতিলিপি আচরণে রোবটের গ্রহণযোগ্যতায় সহায়তা করার জন্য দাবি করা হয় যা সাধারণত মানুষের দ্বারা সম্পাদিত হয়। এই ধরনের রোবট হাঁটা, উত্তোলন, বক্তৃতা, চেতনা, বা অন্য কোন মানুষের কার্যকলাপের প্রতিলিপি করার চেষ্টা করে। আজকের অনেক রোবট প্রকৃতি দ্বারা অনুপ্রাণিত, জৈব-অনুপ্রাণিত রোবটিক্সের ক্ষেত্রে অবদান রাখে ।


     রোবটিক্স প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ:

    বিপজ্জনক কাজে : মানুষের পক্ষে যে সব কাজ অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন সমুদ্রের তলদেশে, যে কোনাে অনুসন্ধানী কাজে, মাইন ইত্যাদি বিস্ফোরক দ্রব্য নিষ্ক্রিয়করণে, নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে, খনির অভ্যন্তরের কোনাে কাজে, নদী-সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রমে রােবট ব্যবহৃত হয়।

    শিল্প-কারখানায় : শিল্পোৎপাদন কাজে, শিল্প-কারখানার ভারী বস্তু নড়াচড়া করানাে, প্যাকিং, সংযােজন, | পরিবহন ইত্যাদি শ্রমসাধ্য কাজ ছাড়াও কম্পিউটার এইডেড কাজে রােবটিক্স-এর ব্যবহার রয়েছে।

    সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজে : মাইক্রোসার্কিটের উপাদান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষণ কাজ এবং ইলেকট্রনিক আইসি, প্রিন্টেড সার্কিট বাের্ড ইত্যাদির তৈরির জন্য রােবট ব্যবহৃত হয়।

    চিকিৎসা ক্ষেত্রে : সার্জারি, জীবাণুমুক্তকরণ, ওষুধ বিতরণ ইত্যাদি কাজে রােবট ব্যবহৃত হয়।

    সামরিক ক্ষেত্রে : বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্তকরণ, বােমা নিষ্ক্রিয়করণ, যুদ্ধক্ষেত্রে এবং অন্যান্য মিলিটারি অপারেশনে রােবট ব্যবহৃত হয়।

    শিক্ষা ও বিনােদনে : শারীরিকভাবে অসুস্থ, পঙ্গু বা অটিস্টিক শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থায় রােবটের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। শিশুদের চিত্তবিনােদনের ক্ষেত্রে খেলনা রােবট এবং মিডিয়া আর্টের ক্ষেত্রেও রােবট ব্যবহৃত হয়।

    নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণে : বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য, অন্ধকারে কোনাে আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করার জন্য, দুষ্কৃতকারী কিংবা বিপজ্জনক আসামীকে ধরার কাজে এবং পর্যবেক্ষণ ইত্যাদিতে পুলিশকে রােবট সহায়তা দিতে থাকে।

    মহাকাশ গবেষণায় : মহাকাশে কিংবা অন্য গ্রহ-উপগ্রহ সম্পর্কিত নানাবিধ তথ্যানুসন্ধান ও বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য বা মহাকাশ যান প্রেরণ করার সময় ব্যাপকহারে রােবটের ব্যবহার আছে।

    ঘরােয়া কাজে : দৈনন্দিন ঘরােয়া কাজে, গৃহকর্মী হিসেবে নিত্যনৈমিত্তিক কার্যাদি সম্পাদনের জন্য রােবট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে রােবটের সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরাে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করে রােবটকে অনেক নতুন নতুন কাজে ব্যবহার করা হবে।

    Tag:এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর/সমাধান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ষষ্ঠ সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট ১,  এইচএসসি ষষ্ঠ সপ্তাহের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ | HSC ICT Assignment Answer 2022 (6th Week)


    Any business enquiry contact us

    Email:-Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)


                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com


     

    কিভাবে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করবেন এবং পাসওয়ার্ড কি দিবেন? বিস্তারিত জেনে নিন