আরো দেখুন
২০২১ সালের এসএসসি ২য় সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর
ভূগোল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিবেদন প্রণয়ন
তারিখঃ ২৩ জুলাই ২০২১
বরাবর ,
প্রধান শিক্ষক / সুপার / অধ্যক্ষ ,
মিরপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় / হাজী দানেশ আলেতন দাখিল মাদ্রাসা ।
মিরপুর , ঢাকা ।
বিষয়ঃ “ ভূগোল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক " বিষয়ক প্রতিবেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে ,আপনার আদেশ নং মিস.বা.উ.বি /৩৭.০২.০০০০.১০৬.২৭.০০১.২০-২৯৫ তারিখ ১৮/০৭/২০২১ অনুসারে উপরোক্ত বিষয়ের উপর আমার স্বব্যখ্যাত প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করলাম ।
“ ভূগােল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক ”
ভূগােলের ধারণা :
গ্রীক পন্ডিত ইরেটোসথেনীস ( Eratosthenes ) প্রথম ভূগােল শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন । গ্রীক শব্দ | জিও ' ( Geo ) অর্থ ভূমন্ডল বা পৃথিবী এবং গ্রাফি ' ( graphy ) অর্থ বর্ণনা , সার্বিক অর্থে মানুষের আবাস এই পৃথিবীর বর্ণনা । ভূগােল বিষয়ের এই মূল ধারণার আজ অবধি তেমন বড় ধরনের কোন পরিবর্তন হয় । নাই । তবে এই প্রসঙ্গে ভূগােল এর দুটি আধুনিক সংজ্ঞা বিবেচনা করা যেতে পারে ।
হার্টশােনের মতে , " Geography is concerned to provide accurate , orderly and rational descriptions and interpretations of the variable character of the earth's surface " - ভূ - পৃষ্ঠের বৈচিত্রময় বৈশিষ্ট্যাবলীর সঠিক , শ্রেণীবদ্ধ এবং যুক্তিসঙ্গত বর্ণনা এবং বিশ্লেষণই ভূগােলের আলােচ্য বিষয় । আরেকজন বিখ্যাত বৃটিশ আধুনিক ভূগােলবিদ । পিটার হেগেট ( ১৯৮১ ) এর মতে , " Geography is the study of the earth's surface as the space within which the human population lives . " অর্থাৎ যে শাস্ত্র ভূ - পৃষ্ঠকে মানবগােষ্ঠির বসবাসের স্থান হিসাবে অধ্যয়ন করে তাহাই ভূগােল ।
পরিবেশের ধারণা :
ভূপৃষ্ঠস্থ দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য যাবতীয় জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে পরিবেশ গঠিত । অজৈব পদার্থের আওতাভূক্ত বিষয়সমূহের মধ্যে পানি , বায়ুমন্ডল ও শিলা -মৃত্তিকা অন্যতম । বায়ুমন্ডল অদৃশ্য হলেও , শিলা -মৃত্তিকা ও পানি দৃশ্যমান । পানি , বায়ুমন্ডল শিলা -মৃত্তিকা অন্যতম । বায়ুমন্ডল অদৃশ্য হলেও , শিলা -মৃত্তিকা ও পানি দৃশ্যমান । পানি , বায়ুমন্ডল ও শিলা মৃত্তিকা সম্মিলিতভাবে জৈব পরিবেশের ভিত্তি গড়ে তুলেছে ।
পরিবেশকে তার গঠন মৌলের আলােকে জৈব ও অজৈব এ দুই পরিবেশে ভাগ করা যায় । অজৈব পরিবেশ মূলত : প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তােলে । পানি , শিলা ও বায়ুমন্ডল প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান গঠনকারী উপাদান । অপরদিকে , এ সব প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠনকারী উপাদানই আবার সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদের গঠন ভিত্তি গড়ে তােলে এবং শক্তি ও খনিজ জােগানের মাধ্যমে পরিবেশ টিকিয়ে রেখেছে।
ভূগােলের পরিধি ও শাখা :
ভূগােলের পরিধি
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ , নতুন নতুন আবিষ্কার , উদ্ভাবন , চিন্তা - ধারণার বিকাশ , সমাজের মূল্যবােধের পরিবর্তন ভূগােলের পরিধিকে অনেক বিস্তৃত করেছে । এখন নানান রকম বিষয় যেমন
পরিবেশে থাকে মাটি , পানি , বায়ু , পাহাড় , পর্বত , নদী , সাগর , আলাে , গাছপালা , পশুপাখি , কীটপতঙ্গ , মানুষ ও অন্যান্য ক্ষুদ্র প্রাণী । মানুষের তৈরি পরিবেশ হলাে সামাজিক পরিবেশ । মানুষের আচার আচরণ , উৎসব - অনুষ্ঠান , রীতি - নীতি , শিক্ষা , মূল্যবােধ , অর্থনীতি , রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তা হলাে সামাজিক পরিবেশ । ভূ - প্রকৃতি , মৃত্তিকা , জলবায়ু , নদ - নদী , আয়তন , অবস্থান , খনিজ সম্পদ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদনসমূহ যেমনিভাবে পরিবেশের উপাদান হিসেবে আমাদের কর্মকান্ডকে প্রভাবিত করে তেমনিভাবে শিক্ষা , সংস্কৃতি , জাতি , ধর্ম , সরকার এগুলাের মত মনুষ্য সৃষ্ট বিভিন্ন উপাদানসমূহও পরিবেশ হিসেবে আমাদের উপর প্রভাব বিস্তার করছে । তাই পরিবেশের উপাদানসমূহকে প্রধানত ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ক) প্রাকৃতিক পরিবেশ
খ ) অপ্রাকৃতিক বা সামাজিক পরিবেশ
ক ) প্রাকৃতিক পরিবেশ : প্রাকৃতিক পরিবেশ হচ্ছে সে সব প্রাকৃতিক উপাদানের সমষ্টি যার উৎপত্তি এবং সৃষ্টি সরাসরি সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত বা সৃষ্ট এবং এর উপর মানুষের কোন হাত নেই । প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রধান প্রধান উপাদানগুলাে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করা হলাে :
১. ভূ - প্রকৃতি : মূলত ভূমির অবস্থা বা ধরনই হচ্ছে ভূ - প্রকৃতি । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বা অঞ্চলের ভূ - প্রকৃতি মূলত : পার্বত্য ভূমি , মালভূমি , সমভূমি , উপত্যকা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে । পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের এসব ভূ - প্রকৃতি বিভিন্নভাবে মানুষের অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে থাকে ।
২. আয়তন : আয়তন বলতে কোন দেশের রাজনৈতিক বা আর্জাতিক সীমারেখাকে বুঝায় । একটি দেশের আয়তন ছােট , বড় বা মাঝারি যে কোন ধরনের হতে পারে । প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান হিসেবে এই আয়তনও মানুষের জীবন যাত্রার উপর ব্যাপকভাবে প্রভাব বিসুর করে।
৩. অবস্থান : কোন দেশ পৃথিবীর কোন অঞ্চলে অবস্থিত সেটাই হচ্ছে তার ভৌগােলিক অবস্থান । একটি দেশের ভৌগােলিক অবস্থান চার প্রকারের হতে পারে । যথা :
i ) দ্বৈপ অবস্থান ; যেমন - জাপান , বৃটিশ দ্বীপপুঞ্জ ইত্যাদি ।
ii)উপদ্বীপ অবস্থান ; যেমন - যুক্তরাষ্ট্র , ভারত ইত্যাদি ।
iii ) মহাদেশীয় অবস্থান ; যেমন- আফগানিস্তান , নেপাল , ভুটান ইত্যাদি
iv) প্রায় অবস্থান ; যমন- সুইডেন , চীন ইত্যাদি।
৪. জলবায়ু : অবস্থানগত তারতম্যের কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উষ্ণ , নাতিশীতােষ্ণ , ঠান্ডা চরম ভাবাপন্ন ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার জলবায়ু দেখা যায় । জলবায়ুর এই বিভিন্নতার কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বাসস্থান , শিল্প , ব্যবসা - বাণিজ্য প্রক্রিয়া , কর্মকুশলতা ইত্যাদির ভেতর পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
৫. মৃত্তিকা : ভূ - পৃষ্ঠের উপরিভাগ যেসব উপাদান দিয়ে গঠিত তাকে মৃত্তিকা বা সহজ কথায় মাটি বলে । মৃত্তিকা মূলত : বেলে , এটেল , দো - আঁশ , পলি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে ।
৬. স্বাভাবিক উদ্ভিজ : ভূ - পৃষ্ঠের উপরিভাগে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকার গাছপালা জন্মে থাকে । এসব গাছপালার সমন্বয়ে বিভিন্ন বনভূমির সৃষ্টি হয় যা পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে ।
৭. খনিজ সম্পদ : পেট্রোলিয়াম , গ্যাস , কলা , লােহা ইত্যাদিকে খনিজ সম্পদ বলে । এগুলাে হচ্ছে পৃথিবীর শিলারে অবস্থিত রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাত বিভিন্ন ধরনের যৌগিক পদার্থ । কোন অঞ্চলে খনিজ সম্পদ ক্ষেত্রের আবিস্কার অতি দ্রুত সেই স্থানের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ধরণ বদলে দিতে পারে ।
খ ) অপ্রাকৃতিক বা সামাজিক পরিবেশ:
মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব থেকে মেধা ও দক্ষতার বিকাশ , প্রশাসন , ধর্মীয় নীতি , লােকজ সংস্কার ইত্যাদির মাধ্যমে তার নিজের উপযােগী অনুকূল সুযােগ সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে । আর পরিবেশের এই অংশটি যা মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট এবং নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তাই হচ্ছে অপ্রাকৃতিক বা সামাজিক পরিবেশ জাতি , ধর্ম , সরকার , জনসংখ্যা , শিক্ষা , সংস্কৃতি ইত্যাদি হচ্ছে এই মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট সামাজিক পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান ।
১. জাতি : পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জাতির মানুষ বাস করে । জাতিগত বৈশিষ্ট্য একটি দেশের | অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । তাই যেসব জাতির লােক পরিশ্রমী , উদ্যমী , বুদ্ধিমান এবং সহিষ্ণু সেসব জাতি তাড়াতাড়ি উন্নতি লাভ করতে পারে ।
২. ধর্ম : বিভিন্ন ধর্মের নিয়ম ও অনুশাসন বিভিন্ন প্রকার । বিভিন্ন ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের কর্ম জীবনে যেমনি প্রভাব বিস্তর করে তেমনি এর প্রভাবের কারনে অর্থনৈতিক কার্যকলাপও ভিন্নরূপে গড়ে ওঠে । বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মে জীব হত্যা পাপ বলে জৈন ও বৌদ্ধ অধ্যুষিত অঞ্চল বিশেষ করে চীন , জাপান , মায়ানমার ( বার্মা ) প্রভৃতি দেশে দীর্ঘকাল মৎস ও মাংস শিল্পের প্রসার ঘটেনি ।
৩. জনসংখ্যা : ভূ - প্রকৃতি , উর্বরতা , জীবিকার সংস্থান , যাতায়াত ব্যবস্থা , নিরাপত্তা ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক কারনের উপর ভিত্তি করে জনবসতি গড়ে ওঠে । আর একটি দেশের যাবতীয় অর্থনৈতিক কার্যাবলী এই জনসংখ্যা দ্বারা সম্পাদিত হয় ।
৪. সরকার : সরকার হলাে দেশ পরিচালনায় নিয়ােজিত একটি সংগঠন । কোন দেশের সরকারের কাঠামাে - এর স্থিতিশীলতা ও শক্তিমত্তা , সে দেশের শিল্প , বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে ।
৫. শিক্ষা : সামাজিক পরিবেশের অন্যতম উপাদান হিসেবে শিক্ষা একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে । তাই উপযুক্ত ও আধুনিক শিক্ষা উন্নতির সােপান । যে দেশের লােক যত বেশী শিক্ষিত সে দেশ তত উন্নত ।
৬. সংস্কৃতি : মানবিক গুণাবলী বিকাশের ক্ষেত্রে সংস্কৃতি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । তাই সংস্কৃতিতে অগ্রসর জাতি দ্রুত উন্নতি লাভ করতে পারে।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা
ক
দশম শ্রেণি , বিভাগঃ মানবিক
রোল নংঃ ০১
মিরপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় / হাজী দানেশ আলেতন দাখিল মাদ্রাসা ।
মিরপুর , ঢাকা ।
প্রতিবেদন তৈরির তারিখঃ ২৩/০৭/২০২১
প্রতিবেদন তৈরির সময়ঃ রাত ১০.০০ মিনিট
আরো দেখুন
এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর ভূগোল ও পরিবেশ (২য় সপ্তাহ)
Tag: এসএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর ভূগোল ও পরিবেশ (২য় সপ্তাহ), ২০২১ সালের এসএসসি ২য় সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর, ভূগোল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিবেদন প্রণয়ন
Any business enquiry contact us
Email:-Educationblog24.com@gmail.com
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)