এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর /সমাধান যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র (এসাইনমেন্ট ১) | ২০২১ সালের এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা এসাইনমেন্ট সমাধান (১ম পত্র)


    ২০২১ সালের এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা এসাইনমেন্ট সমাধান (১ম পত্র)


    শিরোনামঃ যুক্তিবিদ্যা পরিচিতি
    সমাধানঃ

    ভূমিকা : 
    যুক্তিবিদ্যা আমাদেরকে যথাযথ যুক্তি প্রয়ােগের কৌশল এবং বৈধ যুক্তি থেকে অবৈধ যুক্তি পার্থক্য করণের নিয়ম ও পদ্ধতি শিক্ষা দেয় । এ জটিল বস্তুজগতে বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন চিন্তাশীল প্রাণী হিসেবে মানুষের পথ চলার শুরু থেকেই যুক্তিযুক্ত চিন্তার সূত্রপাত হয়েছে । জীবন ধারণ ও জীবন বিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ে বিবিধ প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রামরত অবস্থায় যখনই মানুষ সমস্যার মুখােমুখি হয়েছে তখনই সে ব্যবহার করেছে তার যৌক্তিক চিন্তা সুশৃংখল ও পদ্ধতিগত যৌক্তিক চিন্তা হলাে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞান । আর বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্ঞান হলাে যুক্তিবিদ্যার জ্ঞান। 

    ( ক ) যুক্তিবিদ্যার ধারণাঃ 

    মানব জ্ঞানের প্রাচীনতম শাখাগুলাের একটি হলাে যুক্তিবিদ্যা । পদ্ধতিগতভাবে এরিস্টটল থেকে যাত্রা শুরম্ন করে গাণিতিক যুক্তি ও অতিসাম্প্রতিক কালের কম্পিউটার লজিক নিত্ম এর পরিসর বিস্মৃত । যুক্তিবিদ্যা প্রতিটি বিষয়কে পদ্ধতিগত ও বাস্ত্মবসম্মত হতে সহায়তা করে । যুক্তিবিদ্যার ইংরেজি প্রতিশব্দ Logic শব্দটি উদ্ভুত হয়েছে গ্রিক শব্দ Logos হতে Logos অর্থ হলাে চিত্মা বা শব্দ বা ভাষা । তাই উৎপত্তিগতভাবে যুক্তিবিদ্যাকে ভাষায় প্রকাশিত চিত্মার  আলােচনা বলা হয় । আক্ষরিক অর্থে বাংলায় যুক্তিবিদ্যা বলতে আমরা বুঝি যুক্তির বিদ্যা বা যুক্তি সম্পর্কীয় বিজ্ঞান। 

    এরিস্টটলের যুক্তিবিদ্যার ধারণা ( Aristotle on Logic ) ঃ এরিস্টটল ( ৩৮৪-৩২২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ ) ইজিয়ান সাগরের উত্তর তীরবর্তী গ্রিসের ছােট্ট শহর স্টাগিরায় জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতা ছিলেন মেসিডােনিয়ার রাজা এমিনটাস -২ এর দরবারের একজন চিকিৎসক এবং কিশাের এরিস্টটল ছিলেন ফিলিপের বন্ধু । ফিলিপ পরবর্তী কালে মেসিডােনিয়ার রাজা হয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেটের পিতা । এরিস্টটলকে শিক্ষা লাভের জন্য এথেন্সে প্লেটোর একাডেমিতে পাঠানাে হয় । প্লেটোর মৃত্যুর পর এরিস্টটল এশিয়া মাইনরের ছােট শহর আসােস - এ আসেন এবং সেখানকার শাসনকর্তার মেয়েকে বিয়ে করেন । ছয় বছর পর এরিস্টটল আলে ন্ডারের গৃহ শিক্ষক হওয়ার আমন্ত্রণ পান এবং মেসিডােনিয়ায় গমন করেন । রাজা ফিলিপের গুপ্ত হত্যার পর আলেকজান্ডার যখন সিংহাসনে আরােহন করেন তখন এরিস্টটলের গৃহশিক্ষকতার সমাপ্তি ঘটে । এরিস্টটল এথেন্স ফিরে আসেন এবং এপােলাে লাইসিয়াম মন্দিরের নিকটে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তােলেন যা পরবর্তীকালে লাইসিয়াম নামে বিখ্যাত হয় ।

    হত্যার পর আলেকজান্ডার যখন সিংহাসনে আরােহন করেন তখন এরিস্টটলের গৃহশিক্ষকতার সমাপ্তি ঘটে । এরিস্টটল এথেন্স ফিরে আসেন এবং এপােলাে লাইসিয়াম মন্দিরের নিকটে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তােলেন যা পরবর্তীকালে লাইসিয়াম নামে বিখ্যাত হয় । লাইসিয়াম প্রতিষ্ঠার সময়ে এরিস্টটলকে আলেকজান্ডার অর্থ ও অন্যান্য সহযােগিতা প্রদান করেন । আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর একদল মেসিডােনিয়া বিরােধী বিদ্রোহী এরিস্টটলকে এথেন্স ত্যাগে বাধ্য করেন । এরিস্টটল এথেন্স থেকে ত্রিশ মাইল উত্তরে ক্যালসিস নগরীতে যান এবং এক বছর পর তিনি সেখানে ৬২ বছর বয়সে শেষ নি : শ্বাস ত্যাগ করেন । 

    এরিস্টটল তাঁর মেটাফিজিক্স গ্রন্থেজ্ঞানের সকল শাখাকে তিন ভাগে ভাগ করেন ; যথা : 

    ( ক ) তাত্ত্বিক জ্ঞান- গণিত , প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও ধর্মতত্ত্ব , 
    ( খ ) ব্যবহারিক জ্ঞান- নীতিবিজ্ঞান ও রাজনীতিবিজ্ঞান এবং 
    ( গ ) সৃজনমূলক জ্ঞান অলংকারশাস্ত্র। 

    জে.এস.মিলের যুক্তিবিদ্যার ধারণা ( J.S.Mill on Logic)ঃ 

    দার্শনিক ও ইতিহাসবিদ জেমস মিল ও স্ত্রী হ্যারিয়েট ব্যারাের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন উনিশ শত সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্রিটিশ দার্শনিক , অর্থনীতিবিদ , নৈতিক ও রাজনৈতিক তাত্ত্বিক জন স্টুয়ার্ট মিল ( ১৮০৬-১৮৭৩ জে . এস . মিল যুক্তিবিদ্যা ও নীতিবিদ্যার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখেন | তিনি মনে করেন যে , অবরােহ ও আরােহ যুক্তিবিদ্যার এ দুটি শাখার নিয়মই হলাে সত্য ও জ্ঞান অনুসন্ধান করা  তাঁর মতে , অবরােহ যুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠিত সত্যের। 

    Logic গ্রন্থে যুক্তিবিদ্যার সংজ্ঞায় বলেন , যুক্তিবিদ্যা হলাে আমাদের জ্ঞানগত প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য এমন বিজ্ঞান যা বিচার বা প্রমাণের মাধমে জ্ঞাত সত্য থেকে অজ্ঞাত সত্যে উপণীত হওয়ার জন্য প্রয়ােজনীয় বুদ্ধিগত কাজ ও বৌদ্ধিক ক্রিয়ার মানসিক প্রক্রিয়াসমূহ সম্পর্কে আলােচনা করে মিল কেবল যুক্তিবিদ্যার স্বরূপ নির্ধারণের চেষ্টা করেননি , তিনি যুক্তিবিদ্যাকে বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানের ঙ্গেত্রে প্রয়ােগ করার উপর গুরম্নত্বারােপ করেন। 

    যুক্তিবিদ্যাসম্পর্কে যােসেফের ধারণা ( Joseph on Logic) ঃ 
    ব্রিটিশ অধ্যাপক হােরেস উইলিয়াম ব্রিন্ডলেযােসেফ তাঁর An Introduction to Logic বইয়ে যুক্তিবিদ্যার স্বরূপ নির্ধারণ করার চেষ্টা করেন  তিনি তাঁরবইয়ের On the General Character of the Inquiry নামক অধ্যায়ে যুক্তিবিদ্যাকে একটি বিজ্ঞান হিসেবে উপস্থাপন করেন  যােসেফ মনে করেন যে , যুক্তিবিদ্যা বিজ্ঞান হিসেবে নিজস্ব আলােচ্য বিষয়ের মূলনীতি ব্যাখ্যা করে।  যেমন , যুক্তিবিদ্যা সংজ্ঞার নিয়ম , যৌক্তিক বিভাজনের মূলনীতি , অনুমানের নিয়মাবলি নিয়ে আলােচনা করে  যুক্তিবিদ্যার বিষয়বস্তু হলাে চিত্মা  এ চিত্মা হলাে যুক্তিযুক্ত চিত্মা  যেসব বিষয় নিয়ে চিত্মা করি তার নিয়ম নিয়ে আলােচনা করা যুক্তিবিদ্যার কাজ যােসেফের মতে , যুক্তিবিদ্যা এমন একটি বিজ্ঞান যা চিত্মার সাধারণ নিয়মগুলাে সম্পর্কে আলােচনা করে।  যুক্তিবিদ্যা আমাদের চিত্মার কিারের সাথে সম্পর্কিত  তিনি বলেন যুক্তিবিদ্যা হলাে চিত্মা বিষয়ক বিজ্ঞান বা অধ্যয়ন সম্পর্কিত।  তিনি বলেন যুক্তিবিদ্যা হলাে চিত্মাবিষয়ক বিজ্ঞান বা অধ্যয়ন।  ( Logic is the science or the study of thought ) যােসেফ মনে করেন যে , যুক্তিবিদ্যাকে যদি কলাবিদ্যা হতে হয় তবে অবশ্যই প্রথমে বিজ্ঞান হতে তিনি আরাে বলেন যে , যুক্তিবিদ্যা আমাদের যে কোনাে বিষয়ের মানদ- সরবরাহ করে এবং যুক্তি - চিত্মনের কিছু নিয়ম সরবরাহ করে যা কোনাে শুদ্ধ যুক্তিই লঙ্ঘন করতে পারে না।  যােসেফের যুক্তিবিদ্যা সম্পর্কিত ধারণার কিছু দুর্বলতাও রয়েছে।  যােসেফ যুক্তিবিদ্যাকে কেবল বিজ্ঞান বলেছেন।  তিনি যুক্তিবিদ্যাকে বলেছেন চিত্মা বিষয়ক বিজ্ঞান। 

    যুক্তিবিদ্যাসম্পর্কে আই.এম. কপির ধারণা ( I. M. Copi on Logic ) 
    আমেরিকান অধ্যাপক আরভিং মারমার কপি ( ১৮ জুলাই ১৯১৭-১৯ আগস্ট ২০০২ ) যুক্তিবিদ্যার মূল কাজকে বিবেচনায় নিয়ে যুক্তিবিদ্যা সম্পর্কে আলােচনা করেছেন।  কপি মনে করেন যে , জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুক্তিবিদ্যা ব্যবহার করা যায়।  যুক্তিবিদ্যার পাঠ আমাদের শুদ্ধ যুক্তি থেকে অশুদ্ধ যুক্তি পার্থক্য করতে সহায়তা করে , জ্ঞান অনুসন্ধানকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং আমাদের আগ্রহের যে কোনাে বিষয় বুঝতে সাহায্য করে যুক্তিবিদ্যা আমাদের বুদ্ধিগত যােগ্যতাকে প্রসারিত করে এবং বাস্ত্মব করে তােলে । সকল ক্ষেত্রে গ্রহণযােগ্য ও শুদ্ধ যুক্তি গঠনে সাহায্য pfat Introduction to Logic ( ১৯৭৮ ) বইয়ে যুক্তিবিদ্যার প্রচলিত সংজ্ঞার সমালােচনা করেন এবং নিজের সংজ্ঞা উপস্থাপন করেন।  যুক্তিবিদ্যাকে প্রায়ই চিত্মার নিয়মসমূহের বিজ্ঞান ( science of the laws of thought ) হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।  কপি মনে করেন যে , এ ধরনের সংজ্ঞা যুদ্ধিবিদ্যার যথার্থ সংজ্ঞা বলে মেনে নেওয়া যায় না।  কারণ , চিত্মা কথাটি বেশ ব্যাপক। চিত্মা হলাে মনােবিজ্ঞানের আলােচ্যবিষয় ।


    খ ) বিজ্ঞান ও কলার বৈশিষ্ট্য 

    বিজ্ঞানঃ
    যে জ্ঞানশাখা সুবিন্যস্ত্র ও সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনাে সত্য বা ঘটনার অত্মর্নিহিত নিয়ম আবিষ্কার করে , তাকে  বিজ্ঞান বলে।  যেমন - পদার্থবিদ্যাবিভিন্ন পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও ক্রিয়া প্রত্যক্ষ করে এবং পরীক্ষণ প্রক্রিয়ায় সেগুলােকে বিশ্লেষণ করে কতগুলাে সাধারণ নিয়মের আবিষ্কার করে। এসব সাধারণ নিয়মের সাহায্যে আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে জড় পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও ক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করে।  এভাবে প্রত্যেক বিজ্ঞানই এসব সাধারণ নিয়মের ব্যাখ্যা করে।  এভাবে প্রত্যেক বিজ্ঞানই এসব সাধারণ নিয়মের সাহায্যে প্রকৃতির বিশেষ বিশেষ বিভাগের বস্তু বা ঘটনা সম্পর্কে সুনিশ্চিত ও সুশৃঙ্খল জ্ঞান দান করে থাকে।  তাহলে দেখা যাচ্ছে যে , বিজ্ঞানের কাজ হলাে বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান দান করা।  বিজ্ঞানের লক্ষ হলাে ব্যবহারিক ও পরিপূর্ণ জ্ঞান অনুসন্ধান। 

    কলাবিদ্যাঃ 
    শিল্প বা কলার লক্ষ্য হলাে কাজে নৈপুন্য উৎপাদন  সৃজনশীল কাজে নৈপুন্য উৎপাদনের জন্য বিশেষ বিশেষ নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।  এ পদ্ধতি বা নিয়মও কলার অত্মর্গত।  কলাবিদ্যা হলাে এমন একটি জ্ঞানশাখা যা কোনাে উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আমাদের জ্ঞানকে বাত্মব ক্ষেত্রে সঠিক ভাবে ব্যবহার বা প্রয়ােগ করার বা কাজে লাগানাের রীতিনীতি শিক্ষা দেয়।  অর্থাৎ অর্জিত জ্ঞানের দক্ষতা বা প্রায়ােগিক কুশলতাই হলাে কলাবিদ্যা।  যেমন - চারুকলা শিক্ষা দেয় কীভাবে চিত্র আকঁতে হয়।  নৌবিদ্যা আমাদের শিক্ষা দেয় কিভাবে নৌযান পরিচালনা করতে হয় চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষা দেয় কিভাবে ঔষধ প্রযােগ করে রােগ সারাতে হয় | এখন দেখা যাচ্ছে যে প্রথমত , কলাবিদ্যা বলতে বুঝায় কর্ম সম্পাদনের কৌশল।  দ্বিতীয়ত, কলাবিদ্যা বলতে বুঝায় দঙ্গতা ও পারদর্শিতা।  অর্থাৎ এ জেত্রে প্রায়ােগিক কুশলতাই হলাে কলাবিদ্যা।  কলার মূলকথা হলাে সৃজনশীলতা , বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন আনয়ন  সৃজনশীল কাজে নৈপুন্য উৎপাদনের জন্য বিশেষ বিশেষ নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।  এ পদ্ধতি বা নিয়মও কলার অত্মর্গত। 


    গ ) যুক্তিবিদ্যার স্বরুপ - যুক্তিবিদ্যা বিজ্ঞান না কলা ঃ 

    বিজ্ঞান হিসেবে যুক্তিবিদ্যা : বিজ্ঞানকে অনেক ভাবে শ্রেণিকরণ করা যায়।  যেমন - বস্তুগত বিজ্ঞান যা বস্তুসত্তার প্রকৃতি নিয়ে আলােচনা করে এবং আকারগত বিজ্ঞান যা বিষয় বা বস্তুর আকার নিয়ে আলােচনা করে।  বিষয়বস্তু আলােচনা করার পদ্ধতির ভিত্তিতে বিজ্ঞান আবার দুই প্রকার , যথা - বিষয়নিষ্ঠ বিজ্ঞান ও আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান।  যে বিজ্ঞান বস্তুর উৎপত্তি , স্বরূপ , বিকাশ এবং যথার্থ প্রকৃতির বর্ণনা দেয় তাকে বিষয়নিষ্ঠ বিজ্ঞান বলে।

    প্রকৃতির বর্ণনা দেয় তাকে বিষয়নিষ্ঠ বিজ্ঞান বলে।  যেমন প্রাণিবিদ্যা ; প্রাণিবিদ্যা প্রাণীর উৎপত্তি , প্রকৃতি , আচরণ , বিকাশ ইত্যাদির যথাযথ ব্যাখ্যা ও বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করে।  অন্যদিকে যে বিজ্ঞান কোন আদর্শকে মানদন্ড হিসাবে গ্রহণ করে কোনাে বিষয়ের মূল্য বিচার করে তাকে আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান বলে।  যেমন নীতিবিদ্যা , নীতিবিদ্যার আদর্শ হলাে উত্তম বা ভালাে ( Good )।  অন্যভাবে আবার বিজ্ঞানকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় ; যথা বর্ণনাধর্মী বিজ্ঞান ও ব্যবহারিক বিজ্ঞান।  সাধারণভাবে বলা যায় বিষয়নিষ্ঠ বিজ্ঞানই হলাে বর্ণনাধর্মী বিজ্ঞান।  এ বিজ্ঞান আমাদের জানার পথে তত্তগত উপাদান সরবরাহ করে জ্ঞান আহরণ করতে সাহায্য করে | আর যে বিজ্ঞান আমাদের কতগুলাে নিয়ম নির্দেশ করে সে নিয়মগুলাে আমরা ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। 

    আমাদের উদ্দেশ্য সাধন করতে পারি তাকে ব্যবহারিক বিজ্ঞান বলে।  যেমন- চিকিৎসা বিজ্ঞান।  ব্যবহারিক বিজ্ঞান মূলত কিভাবে কাজটি করতে হয় তা শিক্ষা দেয়।  এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে , যুক্তিবিদ্যা আসলে কোন ধরনের বিজ্ঞান ? যুক্তিবিদ হ্যামিলটন , ম্যানসেল , থমসন , উইভারওয়েগ প্রমুখ মনে করেন যে যুক্তিবিদ্যা হলাে একটি বিজ্ঞান।  কারণ যুক্তিবিদ্যার স্বরূপ বিশেস্নষণ করলে আকারগত বিজ্ঞান ও আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞানের সাথে এর সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায়।  সমকালীন প্রতীকী যুক্তিবিদগণ যুক্তিবিদ্যাকে একটি আকারগত বিজ্ঞান বলেই আখ্যায়িত করেন ৷
    রাসেল , ফ্রেগে , পিনাে , ক্যান্টর প্রমুখ যুক্তিবিদ ছিলেন এ ধারার সমর্থক।  তাঁরা মনে করতেন , আকারগত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে যুক্তিবিদ্যা ও বিশুদ্ধ গণিতশাস্ত্র এক ও অভিন্ন।  যুক্তির আশ্রয়বাক্য ওসিদ্ধাত্মের মধ্যে সম্পর্কের যথার্থ তাৎপর্য মূলত আকারগত ( formal )।  কারণ বাক্যসমূহের বিষয়গত পার্থক্য থাকলেও আকারের দিক থেকে তারা একই রূপ হতে পারে।  যুক্তিবিদ্যা বিশেষ বিশেষ চিত্মার পরিবর্তে চিত্মার সাধারণ আকারের সাথে সম্পর্কিত যুক্তিবিদ হ্যামিলটন তাই মনে করেন , যে বিজ্ঞানে চিত্মার অভ্যন্ত্মরীণ পদ্ধতি রক্ষার জন্য কতগুলাে সাধারণ বিধি প্রণয়ন করা হয় তাই যুক্তিবিদ্যা।  অবশ্য যুক্তিবিদ যােসেফ যুক্তিবিদ্যাকে আকারগত ও বস্তুগত উভয় ধরনের বিজ্ঞান বলেছেন।  

    কলাবিদ্যা হিসেবে যুক্তিবিদ্যা : যুক্তিবিদ অলড্রিচ মনে করেন যে , যুক্তিবিদ্যা কেবল কলাবিদ্যা।  কলাবিদ্যা হিসেবে যুক্তিবিদ্যার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে তুলে ধরা হলাে : যুক্তিবিদ্যা তার নিজস্ব বিষয়বস্তু সম্পর্কে অত্যত্ম যত্নশীল এবং সঠিক চিত্মনের দাবী রাখে এবং অন্য বিষয় পাঠে অনুরূপ যত্নশীলতার অভ্যাস গড়ে তুলতে আমাদেরকে সহায়তা করে।  যুক্তিবিদ্যা বৈধ যুক্তির সাধারণ নিয়মাবলি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানদান করে এবং
    এর ফলে আমরা নিজের ও অন্যের যুক্তির যথার্থতা পরীক্ষা করে দেখতে পারি যুক্তি প্রদান । বিচার করার  ক্ষেত্রে আমাদেরকে নিয়মগুলাে ব্যবহার তে হয়।  যুক্তিবিদ্যা আমাদেরকে ভাষাগত ভ্রাত্মি সম্পর্কে সচেতন করে তােলে এবং এর ফলে যুক্তি প্রদর্শন কালে আমরা অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে পারি এবং অনেক ক্ষেত্রে যুক্তির ভুল এড়াতে পারি।  সর্বোপরি , যুক্তিবিদ্যা যুক্তি প্রদর্শনে বা প্রয়ােগে আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে।  বিশেষ করে , প্রতীকী যুক্তিবিদ্যার  েেত্র তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রাপ্তির পাশাপাশি যুক্তির বৈধতা ও অবৈধতা সম্পর্কিত প্রচুর অনুশীলনী চর্চার ফলে এটি বাস্ত্মব যুক্তি প্রয়ােগে আমাদের দঙ্গতা বৃদ্ধি করে।


    ঘ ) যুক্তিবিদ্যা বিজ্ঞান না কলা এ সম্পকে আমার নিজস্ব মতামতঃ 

    যুক্তিবিদ্যা একটি বিজ্ঞান।  কারণ এটি নির্ভুল চিত্মার নিয়মাবলি নির্দেশ করে এবং শুদ্ধ চিত্মা কাকে বলে সেটি শিক্ষা দেয়।  আর সেই সাথে এটি একটি কলাবিদ্যাও।  কারণ  যুক্তিবিদ্যা শুধুমাত্র চিত্মা বা যুক্তির সাধারণ নিয়মাবলি নির্দেশ করেই ক্ষাত্ম হয় না , সাথে সাথে চিত্মা বা যুক্তিকে সঠিকভাবে প্রয়ােগের কলা কৌশল , দান করে যুক্তিবিদ্যায় যেমন রয়েছে তাত্ত্বিক দিক , তেমনি রয়েছে এর ব্যবহারি বা প্রায়ােগিক দিক।  অতএব , যুক্তিবিদ্যাকে বিজ্ঞান ও কলা উভয় হিসেবে গণ্য করা যায়।  যুক্তিবিদ্যাকে কলাবিদ্যা বলতে হলে প্রথমেই একে বিজ্ঞান বলে স্বীকার করে নিতে হবে | এ প্রসঙ্গে যােসেফ বলেন , এটা পরিষ্কার যে যুক্তিবিদ্যা যদি কলাবিদ্যা হয় তাহলে প্রথমেই এটাকে বিজ্ঞান হতে হবে।  মিল , হােয়েটলি প্রমুখ যুক্তিবিদ মনে করেন যে , যুক্তিবিদ্যা হলাে বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যার সমন্বিত রূপ।  যুক্তিবিদ্যা আমাদের চিত্মা সম্পর্কিত কতগুলাে সাধারণ নিয়ম শিঙ্গা দেয় এবং জ্ঞানের প্রয়ােগ অবিচ্ছেদ্য | মধ্যযুগীয় দার্শনিক ডান্স স্কোটাস মনে করেন - যুক্তিবিদ্যা হলাে science of all Sciences Ges Art of all arts. তবে যুক্তিবিদ্যক পদ্ধতি ব্যবহারের ব্যাপকতার জন্য অনেকে একে জ্ঞানের কৌশল বলে মনে করেন।  যােসেফ তাঁর Introduction to Logic বইয়ে বেজামিন জোয়েটের উদ্ধৃতির উলেস্নখ করেছেন : Logic is neither a science , nor an art , but a dodge



    এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর /সমাধান যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র (এসাইনমেন্ট ১)



    Tag: এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর /সমাধান যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র (এসাইনমেন্ট ১),  ২০২১ সালের এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা এসাইনমেন্ট সমাধান (১ম পত্র)
                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com



    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook এবং Telegram পেজ)