ঈদুল ফিতরের ইতিহাস,গুরুত্ব,ফজিলত জেনে নিন

ঈদুল ফিতরের ইতিহাস,গুরুত্ব,ফজিলত জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠকবৃন্দ বন্ধুরা Educationblog24.Com এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম। আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। বন্ধুরা আজকের এই পোস্ট দ্বারা আপনারা জানতে পারবেন ঈদুল ফিতরের ইতিহাস ও গুরুত্ব এবং ঈদুল ফিতরের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। 
মুসলমানদের জীবনে সবচেয়ে বড় দুইটা ধর্মীয় উৎসব রয়েছে তার মধ্যে প্রথম হলো ঈদুল ফিতর।
সর্বাধিক মহিমান্বিত ও সাওয়াবে ভর্তি মাস পবিত্র রামাদ্বানের পরেই চন্দ্র বর্ষের দশম মাসের সূচনা দিনের মধ্য দিয়েই মাহে সাওয়ালের আগমন। সাওয়ালের বাঁকা চাঁদ বয়ে আনে মুমিন মুসলমানের আনন্দ উৎসবের এক গুচ্ছ স্লোগান
ঈদ ঈদ ঈদ!
হে! মোবারক ঈদ!
টানা ১ মাস রোজা পালনের পর আমরা এই পবিত্র ঈদুল ফিতর পাই। মুসলমানদের জীবনের আনন্দে ও খুশি ভরা মন এই ঈদুল ফিতরের দিন পালন করা হয়। ঈদুল ফিতরে দিনকে পরিবার, পরিজন বন্ধু - বান্ধব সবাইকে সাথে নিয়ে একসাথে ঈদ উদযাপন করা হয়। এই ঈদে অন্যকে খুশি রাখার জন্য ফিতরা অথাৎ যাকাতুল ফিতরা দেওয়া হয়। ঈদুল ফিতরের এই দিনটি ধনী গরিব সবার জন্য সমান। সবাই সমান আনন্দ উপভোগ করতে পারবে। সবাই একসাথে ঈদের ওয়াজিব নামাজ পড়তে পারবে। দীর্ঘ ১ মাস সিয়াম পালনের পরে মুসলমানরা পাই এই ঈদুল ফিতর। আমরা যারা এই ঈদুল ফিতরের ইতিহাস, ফজিলত, গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য এই পোস্ট করা হয়েছে। ঈদুল ফিতরের ইতিহাস,গুরুত্ব,ফজিলত জানাটা মুসলিম জীবনে জানাটা অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 


       
       

    ঈদুল ফিতরের ইতিহাস

    আসুন আমরা জেনে নি ঈদুল ফিতরের সূচনা বা ইতিহাস সম্পর্কে —

    ইসলামের ইতিহাস পাঠে জানা যায় মদীনাবাসী জাহেলী যুগ থেকে শরতের পূর্ণিমায় ‘নওরোজ’ এবং বসন্তের পূর্ণিমায় ‘ মেহেরজান’ নামে দু’টো উৎসব পালন করতো। যা ছিল ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যহীন। এ ব্যাপারে খাদিমুল রাসূল হযরত আনাস (রাদ্বি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘ বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (৬২২ খৃষ্টাব্দে) পবিত্র মক্কা নগরী থেকে হিজরত করে মদীনা মুনাওয়ারায় তাশরীফ আনলেন, তখন তাদেরকে (বৎসরে) দু’দিন খেলাধূলা করতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, এ দু’দিন কিসের? সাহাবাগণ জবাবে বললেন, জাহেলী যুগে আমরা এই দুই দিবসে খেলাধূলা বা আনন্দ প্রকাশ করতাম। অতপর রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ ফরমালেন, আল্লাহ তায়ালা উপরি-উক্ত দিন দু’টির পরিবর্তে তা অপেক্ষা উত্তম দু’টি দিন তোমাদের খুশি প্রকাশ করার জন্য দান করেছেন- এর একটি হচ্ছে- ‘ঈদুল আদ্বহা’ এবং অপরটি হচ্ছে- ‘ঈদুল ফিতর’। তখন থেকেই ইসলামী শরীয়তে দু’টি ঈদ আনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে।


    ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব 

    নানা দিক দিয়ে ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ ব্যাপারে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’র বাণী-প্রণিধানযোগ্য। তিনি এরশাদ করেন, ‘‘যখন ঈদুল ফিতরের দিন আসে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যারা রোজা পালন করেছে; তাদের সম্পর্কে ফিরিশতাদের নিকট গৌরব করে বলেন- ‘‘ হে আমার ফিরিশতাগণ, তোমরা বলতো! যে শ্রমিক তার কাজ পুরোপুরি সম্পাদন করে তার প্রাপ্য কি হওয়া উচিত? উত্তরে ফিরিশতাগণ বললেন, হে মাবুদ! পুরোপুরি পারিশ্রমিকই তার প্রাপ্য। ফিরিশতাগণ, আমার বান্দা-বান্দীগণ তাদের প্রতি নির্দেশিত ফরজ আদায় করেছে, এমনকি দোয়া করতে করতে ঈদের (ওয়াজিব) নামাজের জন্য বের হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় আমার মহিমা, গরিমা, উচ্চ মর্যাদা ও উচ্চাসনের শপথ, আমি অবশ্যই তাদের প্রার্থনায় সাড়া দেব। এরপর নিজ বান্দাগণকে লক্ষ্য করে আল্লাহ পাক ঘোষণা দেন; তোমরা ফিরে যাও, ‘‘আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাদের সাধারণ পাপরাশিকে পুণ্যে পরিণত করে দিলাম। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তখন তারা ক্ষমা প্রাপ্ত অবস্থায় (বাড়িতে) প্রত্যাবর্তন করে।

    ঈদুল ফিতরের ফজিলত ও তাৎপর্য

    (আততারগীব ওয়াত তারহীব) ঈদুল ফিতর-এর ফযীলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে হযরত সাঈদ আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ঈদুল ফিতরের দিনে আল্লাহর ফিরিশতাগণ রাস্তায় নেমে আসেন এবং গলিতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন- মুসলমানগণ! তোমরা আল্লাহর দিকে দ্রুত ধাবিত হও। তিনি তোমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইবাদত কবুল করে অসংখ্য পুণ্য দান করে থাকেন। রোজা রাখার আদেশ করা হয়েছিল তোমাদেরকে, তা তোমরা পালন করেছো যথাযথভাবে। রাতেও জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেছো। অতএব যাও, তাঁর নিকট থেকে গ্রহণ কর তোমাদের ইবাদতের প্রতিদান। (তাবারানী) হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ পাকের বাণী- ‘‘ রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।’’ ঈদের দিনে আল্লাহ তায়ালার এ ঘোষণা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। ঈদ শুধু আনন্দই নয়, ইবাদতও বটে। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘‘ যে ব্যক্তি ঈদের রাতে ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের নিয়তে জাগ্রত থেকে ইবাদত করে, তার অন্তর কিয়ামতের বিভীষিকা হতে মুক্ত থাকবে।’’ মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) হতে বর্ণিত আছে, ‘‘ যে ব্যক্তি পাঁচটি রজনী জাগ্রত থেকে ইবাদত করে তার জন্য বেহেশত্ ওয়াজিব হয়ে যায়। রজনীগুলো এই- জিলহজ্ব মাসের অষ্টম, নবম ও দশম তারিখের রাত, ঈদুল ফিতরের রাত এবং শাবান মাসের পনের তারিখের রাত অর্থাৎ শবে বারাআত।’’ এতেই অনুধাবন করা যায় ঈদুল ফিতরের মাহাত্ম্য, গুরুত্ব ও তাৎপর্য।

    সুনানে ইব্‌ন মাজাহ গ্রন্থে ঈদের ফজিলত সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। তাই এ খুশি ও আনন্দের রাতে ইবাদত ও নফল নামাজ আদায় করা খুবই প্রয়োজন।


    Tag: ঈদুল ফিতরের ইতিহাস,গুরুত্ব,ফজিলত জেনে নিন

                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com



    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Facebook এবং Telegram পেজ)