এইচএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ সমাজবিজ্ঞান (১১তম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৩ | ২০২২ সালের এইচএসসি একাদশ সপ্তাহের সমাজবিজ্ঞান (১ম পত্র) এসাইনমেন্ট সমাধান /উত্তর


    এইচএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ সমাজবিজ্ঞান (১১তম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৩  


    অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনামঃ গ্রামীণ ও শহর সমাজে পরিবারের পরিবর্তনশীল ভূমিকা । 


    পরিবারঃ সমাজ স্বীকৃত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বামী - স্ত্রীর একত্রে বসবাস করাকে পরিবার বলে । ম্যাকাইভারের মতে , সন্তান জন্মদান ও লালন - পালনের জন্য সংগঠিত ক্ষুদ্র বর্গকে পরিবার বলে । আমাদের দেশে সাধারণত মা - বাবা , ভাই - বোন , চাচা - চাচি ও দাদা - দাদির সমন্বয়ে পরিবার গড়ে উঠে । আর এই পরিবার মূলত পরিবার হলো স্নেহ , মায়া , মমতা , ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গঠিত ক্ষুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

    পরিবারের প্রকারভেদঃ আমরা সবাই পরিবারে বাস করি । কিন্তু সব পরিবারের প্রকৃতি ও গঠনকাঠামো এক রকম নয় । কতগুলো নীতির ভিত্তিতে পরিবারকে ভাগ করা যায় । যেমন- 

    ( ক ) বংশ গণনা ও নেতৃত্ব 

    ( খ ) পারিবারিক কাঠামো ও 

    ( গ ) বৈবাহিক সূত্র ।

    ক.বংশ গণনা ও নেতৃত্ব : এ নীতির ভিত্তিতে পরিবারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যথা পিতৃতান্ত্রিক ও মাতৃতান্ত্রিক পরিবার । পিতৃতান্ত্রিক পরিবারে সন্তানরা পিতার বংশপরিচয়ে পরিচিত হয় এবং পিতা পরিবারে নেতৃত্ব দেন । আমাদের দেশের অধিকাংশ পরিবার এ ধরনের । অন্যদিকে , মাতৃতান্ত্রিক পরিবারে মায়ের বংশপরিচয়ে সন্তানরা পরিচিত হয় এবং মা পরিবারে নেতৃত্ব দেন | আমাদের দেশে গারোদের মধ্যে এ ধরনের পরিবার দেখা যায়। 

    খ . পারিবারিক কাঠামো : পারিবারিক গঠন ও কাঠামোর ভিত্তিতে পরিবারকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যথা- একক ও যৌথ পরিবার । একক পরিবার মা - বাবা ও ভাই - বোন নিয়ে গঠিত হয় । এ ধরনের পরিবার ছোট হয়ে থাকে । যৌথ পরিবারে মা - বাবা , ভাই - বোন , দাদা - দাদি , চাচা - চাচি ও অন্যান্য পরিজন একত্রে বাস করে । যৌথ পরিবার বড় পরিবার । বাংলাদেশে উভয় ধরনের পরিবার রয়েছে । তবে বর্তমানে একক পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে । মূলত যৌথ পরিবার কয়েকটি একক পরিবারের সমষ্টি । 

    গ . বৈবাহিক সূত্র : বৈবাহিক সূত্রের ভিত্তিতে তিন ধরনের পরিবার লক্ষ করা যায় । যথা- একপত্নীক , বহুপত্নীক ও বহুপতি পরিবার । একপত্নীক পরিবারে একজন স্বামীর একজন স্ত্রী থাকে । আর বহুপত্নীক পরিবারে একজন স্বামীর একাধিক স্ত্রী থাকে । আমাদের সমাজের অধিকাংশ পরিবার একপত্নীক , তবে বহুপত্নীক পরিবারও কদাচিৎ দেখা যায়।


    পরিবারের বৈশিষ্ট্যঃ অধ্যাপক ম্যাকাইভারের সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে আমরা পরিবারের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই :-

    *পরিবার একটি ক্ষুদ্র বর্গ : বিবাহের মাধ্যমে নারী - পুরুষ পরিবারের সৃষ্টি করে । 

    *জৈবিক সম্পর্ক : নারী - পুরুষ সম্পর্ক বৈবাহিক বন্ধনের উপর প্রতিষ্ঠিত ।

    * রক্ত ও আত্মীয়তার সম্পর্ক : রক্তের বন্ধন দ্বারা পরিবারের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয় । 

    *নৈতিক মূল্যবোধ : স্নেহ , মায়া , মমতা শ্রদ্ধার বন্ধনে আবদ্ধ মানুষের সঙ্গ প্রিয়তার অভিব্যক্তিই হল পরিবার । 

    *বয়োজ্যেষ্ঠের প্রাধান্য : পরিবারে উপার্জনক্ষম বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির প্রাধান্য থাকে । 

    *নামকরণ : পরিবার একটি পদবি দ্বারা পরিচিত । যেমন- কাজী , পাল , ঘোষ । 

    *সামাজিক একক : পরিবার বিস্তার লাভ করে সামাজিক সংগঠনের জন্ম দিয়েছে।

    *চিরন্তন : আবহমান কাল থেকে পরিবার চলে আসছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে । 

    *মানব সভ্যতার আলোকবর্তিকা : পরিবারে সদস্যদের আচার - আচরণ , শৃঙ্খলাবোধ , রুচিবোধ , সুস্থ চিন্তার মানসিকতা সৃষ্টিতে সহায়তা করে মানবসভ্যতার ভিত্তিকে মজবুত করে । 

    *মায়া - মমতা ও অনুরাগের আশ্রয়স্থল : মানবিক উপাদানসমূহ যেমন- ভালোবাসা , অনুরাগ ইত্যাদি মানুষ এ উপাদানের ছোঁয়া পরিবার থেকে পেতে পারে ।


    একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলিঃ সব পরিবারই তাদের দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ কার্যাবলি করে থাকে | কিন্তু একটি আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি হয় অনেক গুছানো এবং নিয়ন্ত্রিত। 

    নিচে আদর্শ পরিবারের কার্যাবলি আলোচনা করা হলোঃ 

    *মিলেমিশে থাকাঃ একটি আদর্শ পরিবারের অন্যতম কার্যাবলি হলো পরিবারের সকলই মিলেমিশে একত্রে বাস করা। আর একাজটাই একটি আদর্শ পরিবার করে থাকে । 

    *শৃঙ্খলাবোধঃ পরিবারের সবাই একটি নির্দিষ্ট শৃঙ্খলার মধ্যে বাস করে । তারা বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক কাজ হতে নিজেদের বিরত রাখে এবং শান্তিতে বসবাস করে 

    *মানসিক শক্তি বৃদ্ধিঃ পরিবারের কারও বিপদে পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ তাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে ফলে সে তার বিপদ হতে দ্রুত । ত সেরে উঠতে পারে  

    *সহযোগী মনোভাবঃ একটি আদর্শ পরিবারের লোকজন সর্বদা একে অন্যের প্রতি সহযোগী মনোভাব প্রকাশ করে। কেউ বিপদে পড়লে তার তাকে সাহায্যের কমতি থাকে না।

    *ক্ষমাপূর্ণ মনোভাবঃ পরিবারের কেউ ভুল কাজ করে থাকলে তাকে শাস্তি না দিয়ে বুঝানোর মাধ্যমে ক্ষমা করে দেওয়ার মনোভাব একটি আদর্শ পরিবারের অন্যতম কার্যাবলি।  

    *একে অপরকে সময় দেয়াঃ এই আধুনিক যুগে সবাই এখন যন্ত্র হয়ে গেছে কিন্তু একটি আদর্শ পরিবারের ক্ষেত্রে অন্যতম কার্যাবলি পরিবারের সব সদস্যই একে অন্যকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দেয়।  

    উপরিউত্তভাবে একটি আদর্শ পরিবার তাদের কার্যাবলি সম্পাদন করে এবং সুখ ও শান্তির সহিত বসবাস করে। 


    গ্রামীণ ও শহুরে পরিবারের বর্তমান অবস্থা ও পরিবারের পরিবর্তনশীল ভূমিকাঃ 

    বর্তমান গ্রামীণ ও শহুরে পরিবারে অবস্থার উপাদানসমূহের অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় । 

    গ্রামীণ পরিবারের বর্তমান অবস্থাঃ বর্তমানের গ্রামীণ পরিবারগুলো আর আগের মত যৌথ পরিবারের আওতায় নেই । বেশিরভাগ পরিবার যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার গঠন করেছে । সন্তানদের সংখ্যা এখন কম । আগের মত পরিবারগুলোতে পারস্পারিক ভালোবাসা দেখা যায় না । মাটির বাড়ি - ঘর সব ইটের ঘরে পরিণত হচ্ছে । ফলে গ্রামীণ পরিবার ক্রমশই শহুরে পরিবারের অবস্থা ধারণ করছে । 

    শহুরে পরিবারের বর্তমান অবস্থাঃ বর্তমান শহুরে পরিবার আরও আধুনিক জীবন যাপন করছে । তারা এখন সর্বদা অর্থের পিছনে ছুটতে গিয়ে আপনজনদের সময় দিতে ভুলে যায় । তারা বাড়িতে থাকে কম , বাহিরে থাকে বেশি । সর্বদা আধুনিক জীবন যাপনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে যেন বাংলাদেশে নয় আমেরিকায় বাস করছে ।


    পরিবারের পরিবর্তনশীল ভূমিকাঃ 

    সময়ের পরিক্রমায় পরিবারের পরিবর্তন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় । যেমন 

    *সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলাঃ বর্তমান পরিবারের সবার একমাত্র লক্ষ্য সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা শিক্ষিত করে তোলা এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়া । যা পূরণে পরিবার সর্বদা তৎপর । 

    *বাধা প্রদানঃ বাড়ির বাহিরে যেতে শিশুদের বাধা প্রদান করা হয় । মূলত তারা নিরাপত্তামূলক কারণে এ কাজ করে থাকে যা শিশুর বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্থ করে । 

    *অধিক উপার্জনঃ সবাই এখন অর্থের পিছনে ছুটছে । বেশি বেশি উপার্জন করতে হবে আর নিজেকে সবার চেয়ে উপরে রাখতে হবে । আর তা পূরণে পরিবার এখন তাগাদা দেয় ।

    *অধিক ব্যস্ততাঃ পরিবার এখন ব্যস্ততার কারখানা । এখানে সবাই ব্যস্ত । কারও সাথে কথা বলার সময় নেই । ফলে এ বিষয়ে পরিবারের ভূমিকা নেই বললেই চলে । 

    *বিনোদনের অভাব পূরণঃ বিনোদনের অভাব এখন সর্বত্রই । তার বর্তমান পরিবারে তা প্রখট । কেননা এখন সবাই ব্যস্ত । তাই পরিবারসমূহ ডিজিটাল উপায়ে তা পূরণে চেষ্টা করছে । 

    *আধুনিকতা গ্রহণঃ সময়ের সাথে নিজেদের চলাতে পরিবার বর্তমানে ভূমিকা পালন করে । আধুনিক জীবন যাপনে পরিবার হতে কোন বাধা আসে না । 

    *ভবিষ্যৎ ভাবনাঃ এখনকার পরিবারগুলো ভবিষ্যত কিভাবে কাটবে সে বিষয়ে অনেক সচেতন । ফলে পরিবারগুলো সে হিসেবে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করছে ।



    ২০২২ সালের এইচএসসি একাদশ সপ্তাহের সমাজবিজ্ঞান (১ম পত্র) এসাইনমেন্ট সমাধান /উত্তর 



    Tag: এইচএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২২ সমাজবিজ্ঞান (১১তম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৩, ২০২২ সালের এইচএসসি একাদশ সপ্তাহের সমাজবিজ্ঞান (১ম পত্র) এসাইনমেন্ট সমাধান /উত্তর 


    Any business enquiry contact us

    Email:-Educationblog24.com@gmail.com

    (সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)


                                   
    Previous Post Next Post


    Any business enquiry contact us

    Email:- Educationblog24.com@gmail.com


     

    কিভাবে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করবেন এবং পাসওয়ার্ড কি দিবেন? বিস্তারিত জেনে নিন