এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২ পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ১৩তম সপ্তাহের উত্তর/সমাধান
এইচএসসি ১৩ তম সপ্তাহের পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান /উত্তর ২০২২
বাঙালির বিভিন্ন তথা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তিতুমীর , এ.কে ফজলুল হক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য আলোকপাত কর ।
অ্যাসাইনমেন্ট এর শিরোনাম
বাঙালির বিভিন্ন তথা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তিতুমীর , এ.কে ফজলুল হক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য "
বাঙালি তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সরল রৈখিক নয় । স্বাধীনতাকামীদেরকে কখনও মোকাবেলা করতে হয়েছে বিদেশীদের ; আবার কখনো বা দেশীয় চক্রের । বাঙালির ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অদম্য আন্দোলনের ইতিহাস , পাকিস্তানী শাসক চক্রের বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় গাঁথা , যা পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতভাষার স্বীকৃতি , ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাহসী ইতিহাস ইত্যাদি ।
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করে । এই স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করা হয়েছে দীর্ঘকাল পূর্বেই । পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ব্রিটিশরা এদেশের মানুষকে পরাধীনতার শিকলে বেঁধে ফেলে । সে শিকল ভাঙ্গার জন্য যুগের পর যুগ বরেণ্য ব্যক্তিরা লড়াই - সংগ্রাম করেছে ।
√√ তিতুমীরের অবদান : স্থানীয় জমিদার ও নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক পর্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অন্যতম এক নাম তিতুমীর । নিম্নবর্গের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করার সাহসী এক লড়াই গড়ে তুলেছিলেন তিতুমীর । ছোটবেলাই তাঁর চরিত্রে দুটি বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ
ঘটেছিল । একদিকে তিনি ছিলেন ধর্মপ্রাণ , সত্যনিষ্ঠ ও অপরদিকে অসমসাহসী । গ্রামের মক্তবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তিতুমীর স্থানীয় এক মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন । আরবি ও ফারসি সাহিত্যে একদিকে যেমন তাঁর ছিল দক্ষতা , অপরদিকে ছিল গভীর অনুরাগ । তিনি ইসলামি শাস্ত্রে পন্ডিত ছিলেন ।। মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে তিতমীর একজন দক্ষ গভীর অনুরাগ । তিনি ইসলামি শাস্ত্রে পন্ডিত ছিলেন । মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে তিতুমীর একজন দক্ষ কুস্তিগীর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন । বিশিষ্ট মল্লবীর হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল বলে তিনি নদীয়ার জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনীর অধিনায়ক পদ 4 লাভ করেন । পরবর্তীতে তিনি ঔপনিবেশিক শাসন ও জমিদার শ্রেণীর উৎপীড়নে বিপর্যস্ত মুসলমান জনসাধারণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য চেষ্টা এবং ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নিজেকে নিয়োজিত করেন । তিতুমীর ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর নারকেলবাড়িয়ায় ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদ হন ।
চিন্তা চেতনার বিকাশ ছোটবেলা থেকেই আরবি ও ফারসি সাহিত্যে তিতুমীরের বেশ দক্ষতা ছিল । ১৮২২ সালে চল্লিশ বছর বয়সে তিতুমীর হজব্রত পালনের জন্য মক্কা শরীফ যান এবং সেখানে বিখ্যাত ইসলামি ধর্মসংস্কারক ও ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আহমদ বেরেলভীর সান্নিধ্য লাভ করেন । ১৮২৭ সালে মওলানা বেরেলভীর মতাদর্শে দীক্ষাগ্রহণের পর তিনি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে ইসলাম ধর্মের প্রচারকার্যে আত্মনিয়োগ করেন ।
তিতুমীর মনে করতে শুরু করেন যে , ইসলামকে তার পূর্ব গৌরবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে প্রথমত ইসলামী জীবন ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে । প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁর আন্দোলনের লক্ষ্য সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কার হলেও , তা ধীরে ধীরে নীলকর , অত্যাচারী জমিদার এবং সর্বোপরি ব্রিটিশ শাসন থেকে বাংলার মানুষকে মুক্ত করার আন্দোলনে রূপ নেয় ।
তিতুমীরের সংগ্রাম একদিকে ছিল ঔপনিবেশিক | শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে , অপরদিকে ছিল শোষক শ্রেণী অর্থাৎ জমিদার ভূ স্বামীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম । তিতুমীর যখন থেকে বিদেশী আধিপতামুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন , ঠিক তখনই ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী ও দেশীয় শোষক - উৎপীড়ক শ্রেণী তাঁর পথে বাধা সৃষ্টি করতে থাকে । এমতাবস্থায় , সাহসী তিতুমীর কায়েমী স্বার্থচক্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলেন । উন্নত রণকৌশল ও মারণাস্ত্রে সুসজ্জিত ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য , তিতুমীর ১৮৩১ সালের অক্টোবর মাসে নারকেলবাড়িয়ায় এক বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন । এ পর্যায়ে তিতুমীর নিজেকে ' বাদশা ' ঘোষণা করেন । নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে ইংরেজ বাহিনী তিতুমীরের বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায় । ১৯ নভেম্বর তিনি শহীদ হন ।
√√ এ . কে ফজলুল হক এর অবদান : বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে যে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজীবন সংগ্রাম করেছেন শেরেবাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক তাদের একজন । তাঁকে একজন জনদরদী রাজনীতিবিদ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় । বাংলার কৃষক সম্প্রদায়ের দাবি - দাওয়া বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি সবসময় তৎপর থাকতেন।
বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে যে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজীবন সংগ্রাম করেছেন শেরেবাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক তাদের একজন । তাঁকে একজন জনদরদী রাজনীতিবিদ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় । বাংলার কৃষক সম্প্রদায়ের দাবি - দাওয়া বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি সবসময় তৎপর থাকতেন । এ জন্য তাঁকে অবহেলিত কৃষক সমাজের যোগ্য অভিভাবক হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় । বাংলার সাধারণ মানুষ তথা কৃষকের জীবন মানোন্নয়ন করার জন্য তিনি শিক্ষার অগ্রগতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন ।
এ . কে ফজলুল হক ১৯৩৫ সালে তাঁর সৃষ্ট রাজনৈতিক দলের নতুন নামকরণ কৃষক প্রজা পার্টি করেন । মহাজন ও জমিদারদের অত্যাচার থেকে কৃষকদের মুক্তিদান ও জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ করার জন্য ফজলুল হকের নেতৃত্বে কৃষক প্রজা পার্টি গণ - আন্দোলন পর্যন্ত করেছে । তিনি নানান সময়ে রাষ্ট্রীয় পদে আসীন থাকা অবস্থায় সর্বনাশা ঋণের হাত থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ।
শিক্ষামন্ত্রী প্রসারের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । তাঁর সময়ে বঙ্গীয় আইনসভায় প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করে আইন পাশ করা হয় । বাংলার হতদরিদ্র প্রজাকূলের জন্য আজীবন লড়াই করেছেন শেরেবাংলা । লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপন ছিলেন শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক । এই লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমেই প্রথম বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখানো হয় ।
ফজলুল হক বাল্যকাল থেকেই তীক্ষ্ণ মেধা শক্তির পরিচয় দেন । তৎকালে জমিদারের জুলুম ও ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর শোষণ তাঁর অন্তরে মর্মপীড়া সৃষ্টি করেছিল । ফজলুল হক সাধারণ মানুষের দুঃখ - দুর্দশা দারুণভাবে অনুভব করতেন । তাঁর সারা জীবনের রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধন । ফজলুল হকের কর্মময় জীবন ছিল অত্যন্ত বিচিত্র । তাঁর জীবদ্দশায়
সকল সম্প্রদায়ের কাছে সমান জনপ্রিয় ছিলেন এ কে ফজলুল হক । নিম্নে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের কিছু রাজনৈতিক চিন্তা ও কর্মকান্ড তুলে ধরা হল :
√ ১৯১৬ সালের হিন্দু - মুসলমান ' লক্ষ্ণৌ চুক্তি সম্পাদনে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিলেন ।
১৯১৮-১৯ সালে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন । ১৯২৯ সালে তিনি ' নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন , ১৯৩৬ সালে যার নতুন নামকরণ হয় কৃষক - প্রজা পার্টি ।
১৯৩০-১৯৩২ সালে লন্ডনে ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের লক্ষে যে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় , সেখানে তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং জোরালো বক্তব্য রাখেন ।১৯৪২ সালে সামান্য কয়েক দিন বাদে , ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আসীন ছিলেন।
১৯৪০ সালে লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন । এ প্রস্তাবে একাধিক স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছিল । ১৯৪২ সাল থেকেই শেরেবাংলা সাম্প্রদায়িক “ দ্বিজাতি তত্ত্বের ” জোরালো বিরোধীতা শুরু করেন ।
পিছিয়ে পড়া মুসলমান সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এ কে ফজলুল হক কেন্দ্ৰীয় ও প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থায় সকল সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন । ব্রিটিশ শাসন এবং অবাঙালি নেতৃত্বের বিরোধিতা ছিল তাঁর চেতনামূলে । কৃষক - প্রজা সাধারণ মানুষ ছিল তাঁর রাজনৈতিক চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে । হিন্দু - মুসলিম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের কাছে সমান জনপ্রিয় ছিলেন।
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকই এ জনপদের রাজনীতিতে জমিদার - অভিজাত নেতৃত্বের চিরাচরিত বেষ্টনী ভেঙ্গে দেন । তিনি সাধারণ মানুষের জন্য ‘ ডাল - ভাত ’ কর্মসূচি প্রবর্তন করেন ।
ফজলুল হক সাধারণ মানুষের দুঃখ - দুর্দশা দারুণভাবে অনুভব করতেন । তাঁর সারা জীবনের রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধন । ফজলুল হকের কর্মময় জীবন ছিল অত্যন্ত বিচিত্র । তাঁর জীবদ্দশায় তিনি পত্রিকা সম্পাদনা , আইন ব্যবসা , অধ্যাপনা , সরকারি চাকরি এবং রাজনীতি সবই করেছেন । ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি মারা যান ।
√√ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান :
পাকিস্তানী অভ্যন্তরীণ উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে বাঙালির দুই যুগ দীর্ঘ সংগ্রামের সর্বাগ্রে গণ্য নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । বাঙালির জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত অধ্যায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং এ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । যুগের পর যুগ বাঙালির লড়াই সংগ্রাম পরিণতি পায় বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্বের মাধ্যমে । তিনি স্কুল ছাত্র থাকা অবস্থায় জনহিতকর ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন । তরুন বয়সেই বঙ্গবন্ধু ভারতীয় উপমহাদেশের তুখোড় রাজনৈতিক নেতা হোসেন সোহরাওয়ার্দীর সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর যোগ্য রাজনৈতিক শিক্ষানবিশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে থাকেন ।
ভারত ভাগ হবার পর শেখ মুজিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন । চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করায় তাঁকে ১৯৪৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় । ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠনে অন্যতম প্রধান সংগঠক ছিলেন শেখ মুজিব । ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা , ভাষা আন্দোলন , যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন , আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরোধী তথা বাঙালির স্বাধিকারের লড়াইয়ে শেখ মুজিব অগ্রসৈনিক । ১৯৬৬ সালের ছয় দফা বঙ্গবন্ধুকে অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত করে । ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান , ১৯৭০ সালের নির্বাচন শেষ বিচারে বঙ্গবন্ধ অমোঘ নেতৃত্বের পরিচয় বহন করেন ।
নির্বাচনে জয় লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিকে ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করার ঘৃন্য ষড়যন্ত্রের | প্রতিবাদে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরুতেই অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু । এই অসহযোগ ছিল মূলত পাকিস্তানের মৃত্যু পরোয়ানা । ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যাবতীয় সঙ্কেত প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু ।
অত : পর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর কন্ঠ থেকে নিঃসৃত হয় স্বাধীনতার ঘোষণা ৷বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল পথ চলতে বাধা - বিপত্তিতে পড়লে তিনি কখনো তা এড়িয়ে চলেননি ; বরং সাহসিকতার সঙ্গে তার মোকাবেলা করেছেন । শেখ মুজিব ছিলেন আজীবন রাজনীতিক । রাজনৈতিক জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি শেরেবাংলা এ কে . ফজলুল হক , মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মত পুরোধা রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্যে আসেন এবং তাদের কাছ থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন । এ ছাড়া নেতাজী সুভাষ বসুর স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রয়াস বঙ্গবন্ধুকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে । ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজ বাসভবনে দৃশ্যত সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাষী বিশ্বাসঘাতকের হাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক চিন্তা বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যায় , তিনি মনে প্রাণে ছিলেন একজন উদারনৈতিক মুক্তিকামী মানুষ । তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড পুরোটা জুড়ে ছিল বাংলার গণমানুষের মুক্তি । নিম্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরও কিছু রাজনৈতিক চিন্তা তুলে ধরা হল :
√ পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকলেও , সাম্প্রদায়িক ‘ দ্বিজাতি তত্ত্বে ’ বঙ্গবন্ধুর অবিশ্বাস ছিল । তাই পাকিস্তানের জন্মের অল্প সময় পর থেকেই তিনি অসাম্প্রদায়িক উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথে হাঁটতে শুরু করেন ।
পাকিস্তানের একেবারে সূচনা পর্বেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন যে পশ্চিম পাকিস্তানীরা বাঙালিদের ন্যায্য হিস্যা কখনোই বুঝিয়ে দেবে না । দল ও দলের বাইরে বিরোধীতা স্বত্ত্বেও ১৯৬৬ সালে ছয় দফা উত্থাপনের দূরদর্শিতা দেখান বঙ্গবন্ধু । ছয় দফা পরবর্তীতে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে চিহ্নিত হয় ।
১৯৭০ সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা পর্যন্ত প্রত্যেকটি ধাপে সর্বোচ্চ মাত্রার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দেন বঙ্গবন্ধু । তিনি কখনোই বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রামকে তথাকথিত বিচ্ছিনতাবাদের তকমার মধ্যে আটক হতে দিতে চাননি । মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে , ১৯৭১ সালের ৫ ই এপ্রিল প্রকাশিত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ম্যাগাজিন নিউজউইক এর প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধুকে পোয়েট অব পলিটিক্স ’ অর্থাৎ ‘ রাজনীতির কবি ' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় ।
স্বাধীনতার পরে জাতি গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য একের পর এক আদর্শিক ও বাস্তবানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু । দেশের ভেতরে নানামুখী শক্তির অরাজকতা ও বিদেশী চক্রান্তের পরিণতিতে একের পর এক বাধাগ্রস্ত হলেও , আমৃত্যু বাংলার মানুষের মুক্তির লড়াই চালিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু ।
Tag:এইচএসসি এসাইনমেন্ট ২০২২ পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ১৩তম সপ্তাহের উত্তর/সমাধান | বাঙালির বিভিন্ন তথা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তিতুমীর , এ.কে ফজলুল হক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য আলোকপাত কর | এইচএসসি ১৩ তম সপ্তাহের পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান /উত্তর ২০২২
Any business enquiry contact us
Email:-Educationblog24.com@gmail.com
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)